শনিবার, ১৮ জুন, ২০১১

বিচিত্র এ পৃথিবী


বিদায় বন্ধু
নিউজিল্যান্ডের জন্য মঙ্গলবার দিনটা ছিল শোকের। এদিনই যে জানানো হলো
শ্রেক আর বেঁচে নেই! কিন্তু কে এই শ্রেক? বড় কোনো ব্যক্তিত্ব, তারকা? তারকা তো অবশ্যই। তবে দু পেয়ে কেউ নয়; শ্রেক হলো একটা ভেড়া। অবশ্যই বিখ্যাত ভেড়া। না হলে তার মৃত্যুর খবর এমন ফলাও করে প্রচার করে কোন অর্বাচীন!
শ্রেক ভেড়া হয়েও কেন বিখ্যাত সেটি জানতে হলে একটু পেছনে চলে যেতে হবে। ১৯৯৮ সালে এই ভেড়াটি হারিয়ে গিয়েছিল। ছয় বছরেও সন্ধান মেলেনি যখন, ধারণা করা হলো, নিশ্চয়ই মরে গেছে। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে ২০০৪ সালে একটা গুহা থেকে উদ্ধার করা হলো শ্রেককে। তত দিনে তার গায়ের পশম স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেছে তিন গুণ। 
নিউজিল্যান্ডে গবাদিপশু হিসেবে ভেড়া এমনিতেই অনেক জনপ্রিয়। নিজেদের মাত্র ৪৩ লাখ জনসংখ্যার হিসাব দিতে গিয়ে তারা ভেড়ার হিসাবও টেনে আনে। কারণ এরই মধ্যে দেশটিতে মানুষের চেয়ে ভেড়ার সংখ্যা বেড়ে গেছে দশ গুণ! তার ওপর শ্রেকের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে
মানবিক গল্প। হারিয়ে গিয়ে, একা একা থেকে সব প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে টিকে ছিল শ্রেক। এতটাই বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল, তার গা থেকে পশম কেটে নেওয়ার দৃশ্য সরাসরি প্রচারিতও হয়েছে। শুধু কি তা-ই? নিউজিল্যান্ডের তখনকার প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্কের সঙ্গে জাতীয় সংসদ ভবনে গিয়ে সাক্ষাৎও করে এসেছে শ্রেক। নিয়মিত দাতব্য কাজে অংশ নিয়ে প্রচুর টাকাও সংগ্রহ করে দিয়েছে।
কিন্তু বয়সের কাছে হার মানতে হয় সবাইকে। ১৬ বছর বয়সী শ্রেকও মেনেছে। তার মৃত্যুকে আর সব বিখ্যাত কিউই নাগরিকের সঙ্গেই তুলনা করে সাউথল্যান্ড টাইমস লিখেছে,
শেষ পর্যন্ত একজন আইকনিক কিউইর মৃত্যু হলো। নিউজিল্যান্ডের চার্চ অব দ্য গুড শেফার্ড-এ তার স্মরণে অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় শোক জানালেও সেটা হয়তো বাড়াবাড়ি মনে হতো না।
প্রয়াত শ্রেক আমাদের আবারও সেই সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, কিছু কিছু মানুষ পশুরও নিচের স্তরে নেমে যায়, আর কিছু কিছু পশু মানুষেরও ওপরের স্তরে উঠে আসে!

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons