বারবার ভালোবাসার কথা বলে সহপাঠীকে বিরক্ত করায় প্রথম শাস্তি ১০১ বার কান ধরে ওঠবস। এতে মোটেই দমেনি, ভালোবাসার প্রমাণ দিতে ব্লেড দিয়ে হাত কেটে রক্তের অক্ষরে লিখেছে ওই সহপাঠীর নাম। তাতেও যখন কাজ হয়নি, তখন এ জীবন রাখা অর্থহীন মনে হয়েছে তার কাছে। তাই সহপাঠীর সামনেই বিষপানে আত্দহত্যার চেষ্টা করেছে। এরপর হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়েই সহপাঠীকে বিয়ে করতে ছুটে গেছে তার বাড়িতে। কিন্তু বিয়ে তো হয়নি, উল্টো বৃহস্পতিবার তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে মাদ্রাসা থেকে। এত কিছুর নায়ক বাগেরহাটের যাত্রাপুরের আফরা এবতেদায়ী মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র আবদুল্লাহ আল মামুন। প্রেম-ভালোবাসার উপাখ্যান শিরি-ফরহাদ, লাইলি-মজনু কিংবা রহিম-রূপবানের মতো
এ যুগে আবদুল্লাহ আল মামুনও যেন নতুন ইতিহাস গড়তে চায়। আফরা এবতেদায়ী মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবদুল মতিন জানান, তাঁর মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র আবদুল্লাহ আল মামুন সহপাঠী রূপাকে (ছদ্মনাম) বেশ কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন ভাবে প্রেম নিবেদন করে। রূপার সাড়া না পাওয়ায় আল মামুন আবারও তাকে ভালোবাসার কথা বলে এবং প্রয়োজনে বিয়ে করতে চায়। এ সময় রূপা মামুনকে গালিগালাজ করে এবং এ বিষয়ে মাদ্রাসার এক শিক্ষকের কাছে নালিশ করে। এ ঘটনা শুনে মাদ্রাসা সুপার পিয়নের ম্যাধমে আল মামুনকে ডেকে এনে কান ধরে ১০১ বার ওঠবস করিয়ে শাস্তি দেন। এরপর গত মঙ্গলবার আল মামুন বাড়ি থেকে ব্লেড এনে সব ছাত্রছাত্রীর সামনে নিজের হাত কেটে রক্ত দিয়ে রূপার নাম লিখে দেখায়। এতে দ্বিতীয় দফা নালিশ যায় সুপারের কাছে। এ সময় আবারও তাকে শিক্ষকরা বকাবকি করেন। কিন্তু তবুও দমেনি প্রেমিকপ্রবর। বুধবার আল মামুন বাড়ি থেকে বোরো ধানের জমিতে দেওয়ার জন্য রাখা বিষ এনে মাদ্রাসায় সবার সামনে রূপাকে ডেকে দেখিয়ে বিষ পান করে। আল মামুনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তার বাবা শেখ আহম্মদ আলীকে খবর দেওয়া হয়। আল মামুন বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ফিরে বিয়ের জন্য প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়। এলাকাবাসী তাকে ধরে বাবার কাছে দিয়ে আসে। এ ঘটনায় ওই দিনই মাদ্রাসা থেকে আল মামুনকে বহিষ্কার করা হয়। আল মামুনের বাবা শেখ আহম্মদ আলী জানান, বেশ কিছু দিন ধরেই মামুন বাড়িতে অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। পড়াশোনাসহ কোনো কিছুতেই মন ছিল না। তিনি ছেলেকে বাড়িতে আটকে রেখে চিকিৎসা করাবেন বলে জানান। যাত্রাপুর গ্রামে আল মামুনের বাড়ির আশপাশের এলাকায় এ ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শিশু প্রেমিকের এ কর্মকাণ্ডে বিস্ময়ের পাশাপাশি তাকে দেখতে উৎসুকদের অনেকেই ভিড় করছেন।_সুনীল দাস, বাগেরহাট।




২:৩৯ PM
মম
Posted in:
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন