মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০১১

সর্পগ্রামের গল্প


্রগ্রামটির ঘরে ঘরে বিভিন্ন ধরনের সাপ। কোনোটি বিষাক্ত, কোনোটি বা নির্বিষ। এই সাপের সঙ্গে মিশে আছে গ্রামবাসীর জীবন ও জীবিকা। সাপের ব্যবসায় আসছে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ। সে অর্থ খুলে দিয়েছে গ্রামটির উন্নতির দুয়ার।
চীনের পূর্বাঞ্চলীয় ঝেজিয়াং প্রদেশের বিশাল কৃষিভূমিতে রয়েছে সেই জিজিকিয়াও গ্রাম। পূর্বপুরুষেরা কৃষিকাজ ও পশুপালন করে জীবিকা চালালেও এখন সাপের লালন-পালনই সেখানে সব। লাঙল, কাস্তে, কোদাল, জোয়াল ছেড়ে গ্রামবাসী ঘরে তুলেছে সাপ। সাপই এখন তাদের নতুন জীবনের স্বপ্ন।
জিজিকিয়াও গ্রামের কোনো বাড়িতে ঢুকলেই চোখে পড়বে একগাদা সাপ কিলবিল করছে। বিষধর সাপের মধ্যে গোখরা ও ভাইপারই বেশি। নির্বিষ সাপের মধ্যে অজগরও রয়েছে।
চীনের অনেক এলাকায় যুগ যুগ ধরে সাপ খাওয়া হচ্ছে। সাপের এই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই জিজিকিয়াও গ্রামের লোকজন এই ব্যবসায় নেমেছে।
শুরুটা করেছিলেন ইয়াং হংচাং। ৬০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ জঙ্গল থেকে সাপ ধরে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেন। একপর্যায়ে ভাবলেন, এভাবে সাপ ধরে বিক্রি করলে একসময় জঙ্গল সাফ হয়ে যাবে। তাই ১৯৮৫ সালে শুরু করেন সাপের লালন-পালন। তিন বছরের মাথায় তিনি লাভের দেখা পেলেন। তা দেখে গ্রামের অন্যরাও নেমে পড়লেন এ ব্যবসায়। গ্রামের ১৬০টি পরিবার এখন এই জীবিকার সঙ্গে জড়িত। বছরে ৩০ লাখের বেশি সাপের জন্ম হচ্ছে তাদের খামারে। 
ব্যবসা সম্প্রসারণে ইয়াং একটি কোম্পানি চালু করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা নানা জাতের সাপ নিয়ে গবেষণা করছি। গবেষণা চলছে সাপের বংশবিস্তারের উপায় নিয়ে।’ ইয়াংয়ের কোম্পানিতে বর্তমানে সাপের শুঁটকি ও চূর্ণ তৈরি নিয়ে গবেষণা চলছে। 
গ্রামের অপর সাপ ব্যবসায়ী ইয়াং জিউবাং (৪৬)। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি সাপের খামার করেছেন। রেস্তোরাঁ ও ওষুধের দোকানে সাপের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তাঁর ব্যবসা দিন দিন ফুলে-ফেঁপে উঠছে। সাপের চূর্ণ ওষুধের কারখানায় সরবরাহ করছেন তিনি। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায়ও রপ্তানি করা হচ্ছে সাপের তৈরি খাবার ও ওষুধ। রয়টার্স।
প্রথম আলো

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons