সোমবার, ২০ জুন, ২০১১

বিচিত্র এ পৃথিবী



জন্মদিনের পোশাকে
পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে—কীভাবে বুঝবেন? গবেষকেরা আপনাকে নানা কায়দা-কানুন বাতলে দেবেন। ছোঃ! ওসব কিছুই না। সহজ উপায় জেনে নিন—যখন দেখবেন, আপনার আশপাশে ‘জন্মদিনের পোশাক’ পরা লোকের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
চিলিতে একদল আন্দোলনই শুরু করে দিয়েছে, যে আন্দোলনের নাম শুনলেই ঘটনা পরিষ্কার হয়ে যাবে—ওয়ার্ল্ড ন্যাকেড বাইক রাইড। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় এই আন্দোলনের কর্মীদের পরনে কাপড়-চোপড় ছিল বটে, কিন্তু সাইকেল চালিয়ে যতই তাঁরা এগোতে থাকেন, ততই কমতে থাকতে পরনের পোশাকের পরিমাণ। সবাই মিলে যখন প্লাজা ইতালিয়ায় সমবেত হলেন, প্রায় অধিকাংশই জন্মদিনের পোশাকে! সাইক্লিস্টদের অধিকার রক্ষা এবং তেলচালিত গাড়ির পরিবর্তে বিশ্বজুড়ে সাইকেলকে বিকল্প বাহন হিসেবে জনপ্রিয় করে তোলাই তাঁদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য। মহৎ উদ্দেশ্য, সন্দেহ নেই। কিন্তু বেরসিক পুলিশের সেটা পছন্দ হবে কেন! তাই ‘নৈতিক স্খলনের’ অপরাধে চিলির পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে তাঁদের!

দাবি পূরণে
বলা হচ্ছিল গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কথা। এর একটা নমুনা তো প্রথমেই পেলেন। তবে শুধু যে সামাজিক কাজেই মানুষ পোশাক-আশাক ছুড়ে ফেলছে, তা কিন্তু নয়। অনেক সময় ব্যক্তিগত দাবিদাওয়া আদায় করতেও এই ‘অস্ত্র’ ব্যবহার করা হচ্ছে। বেশ কয়েক বছর আগে নিউইয়র্কের এক লোক তাঁর বেতন বাড়ানোর দাবিতে বসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পুরো নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন টাইমস স্কয়ারে। হাতে শুধু ধরা ছিল প্ল্যাকার্ড, যেটার মোদ্দাকথা—এই বেতনে পোষায় না।
প্রায় একই কায়দায় সম্প্রতি মাদ্রিদ বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি বিমানকে আবারও ফিরে যেতে বাধ্য করেছেন এক জার্মান যাত্রী। বলা নেই কওয়া নেই, হঠাৎ সেই যাত্রী নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে চিৎকার শুরু করেন। এমনিতে সময়টা ভালো নয়। চলমান বিমানে কারও সন্দেহজনক আচরণ দেখলেই যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। কিন্তু সেই যাত্রী ভয়ংকর কিছু করেননি। শুধু যখন দেখলেন তাঁর কথামতো বিমান ঘোরানো হচ্ছে না, একে একে খুলতে শুরু করে দিলেন নিজের জামা-কাপড়! একসময় পুরো...।
বিমানের নিরাপত্তাকর্মীরা এগিয়ে এসে তাঁকে নিরস্ত করতে চাইলে দৌড়ে গিয়ে ওই যাত্রী টয়লেটে আটকে ফেলেন নিজেকে। বাধ্য হয়েই পাইলট মাদ্রিদ বিমানবন্দরে ফিরিয়ে নেন বিমান। সেখানে অপেক্ষমাণ পুলিশ গ্রেপ্তার করে তাঁকে। কেন ওই ব্যক্তি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তার ব্যাখ্যা পুলিশ দিতে পারেনি।
আরে ভাই, গ্লোবাল ওয়ার্মিং!

বাসে বাস
হঠাৎ চিলির এর আগ্নেয়গিরির পেটে সমস্যা দেখা দিয়েছে। সম্ভবত বদহজম। ফলাফল, দিনমান ধোঁয়ার উদিগরণ। আকাশে তৈরি হয়েছে ছাইমেঘ। এর ফলে দক্ষিণ আমেরিকার একটা বড় অংশের আকাশপথ বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের আবার আর্জেন্টাইন নেতাদের সঙ্গে বৈঠক ছিল। দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হওয়ার জন্য আর্জেন্টাইন নেতাদের সমর্থন চাইতে এসেছিলেন। কিন্তু ছাইমেঘের কারণে বুয়েনেস এইরেসের পরিবর্তে তাঁর বিমান গিয়ে নামে করদোবায়। সেখান থেকে প্লেনের পরিবর্তে বাসে চড়েই যাত্রা করেছেন মুন। ৭০০ কিলোমিটারের দীর্ঘ পথ। একে তো কষ্টকর যাত্রা, তার ওপর আরও বেদনার কথা হলো, গত সোমবার ছিল মুনের জন্মদিন। আক্ষরিক অর্থেই জন্মদিনটা বাসে কেটেছে তাঁর!

আয়রন ম্যান
ধরুন, আপনার পাশের সহকর্মীটি নিপাট ভদ্রলোক, প্রতিদিন নিয়ম করে ঘড়ি ধরে অফিসে আসেন। পরনে থাকে কোট-টাই। সুবেশী। কোনো বাচালতা, বাতুলতা নেই। হঠাৎ কি হলো, একদিন সেই ভদ্রলোকের পরিবর্তে অফিসে চলে এল আয়রন ম্যান! হ্যাঁ, চলচ্চিত্রের পর্দায় দেখা সেই সুপার হিরোই। প্রথম প্রথম সবারই ভিরমি খাওয়ার অবস্থা হওয়ার কথা।
তা-ই হয়েছিল সাংহাইয়ের ওয়াং ক্যাংয়ের সহকর্মীদের। ২৫ বছর বয়সী ওয়াং বলা নেই কওয়া নেই হুট করে একদিন আয়রন ম্যান সেজে এসেছিলেন অফিসে। পরনে ছিল ৫০ কেজি ওজনের সব ভারী পোশাক-আশাক। প্রথমে তাঁকে দেখে ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলেন অনেকে, কেউ কেউ চিৎকার করেও উঠেছেন। পরে হেলমেটের ফাঁক দিয়ে একজোড়া পরিচিত ঠোঁটের হাসি আশ্বস্ত করেছে, লোকটা দেও-দানো কেউ নয়, বায়ুগ্রস্ত উন্মাদও নয়; এ তাঁদেরই টেলিকম অফিসের সহকর্মী ওয়াং।
কিন্তু এই বুদ্ধি তাঁর ঘটে ধরল কী করে? কারণ একটাই—আলোচনায় আসা, বিখ্যাত হওয়া। তা খানিকটা খ্যাতি তাঁর জমেছে বৈকি। ওয়াং জানিয়েছেন, পত্রপত্রিকায় তাঁকে নিয়ে খবর ছাপার পর মেয়েরা নাকি এরই মধ্যে চিঠি লিখে তাঁর কাছে প্রেম নিবেদন করছে। আর অফিসটাকে সারা বিশ্বের খবর বানিয়ে দেওয়ায় মিলেছে পদোন্নতিও।
ওয়াংয়ের বুদ্ধিটা কাজে লাগিয়ে একদিন ওভাবে অফিসে হাজির হতে পারেন আপনিও। অবশ্য পথিমধ্যে আবার ৎব-পুলিশি ঝামেলায় যেন না পড়েন!

কল্পনাবিলাসী
হাত তাঁর থেকেও নেই। প্রায় পুরো শরীরই পক্ষাঘাতগ্রস্ত। কিন্তু মনটা তো আছে। কল্পনাবিলাসী মন নিয়েই নিজের ১৮ বছর বয়সী তরুণী ওয়াং কোয়াইনজিন এবার প্রকাশ করতে চলেছেন তাঁর প্রথম উপন্যাস! ঠোঁট দিয়ে কি-বোর্ড ব্যবহার করতে অভ্যস্ত তিনি। এভাবেই সাইবার-জগতে লিখেছেন তাঁর অনেক গল্প। সেগুলো পাঠকমহলে প্রশংসিতও হয়েছে। এবার ওয়াং প্রস্তাব পেয়েছেন উপন্যাসই প্রকাশ করার। দুই লাখ শব্দের একটা প্রেমকাহিনি লিখছেন, যেখানে ধনী পরিবারের এক মেয়ে প্রেমে পড়ে যায় এক গ্যাংস্টারের!
গ্রন্থনা: রাজীব হাসান 
প্রথম আলো

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons