শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০১১

যেমন খুশি তেমন চলছে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়



হুট করে শিক্ষা কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়া, কোর্সের মেয়াদ বাড়ানো-কমানো, পাঠ্যবইয়ে ‘ইতিহাস বিকৃত’ বলে এসএসসি-এইচএসসিতে ভর্তি বন্ধ রাখা, ভর্তির পদ্ধতি বদলের কারণে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অবিশ্বাস্য রকম কমেছে। ২০০৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল দুই লাখ পাঁচ হাজার ৫৯৯ জন। ২০১০ সালে ভর্তি হয়েছে মাত্র চার হাজার ৮২১ জন।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি শিক্ষা কোর্সের মধ্যে বিএড ও বিবিএ ছাড়া কোনো কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়নি। ফলে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২২ দশমিক ১৩ শতাংশ কম হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ব্যয়ও করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বাজেট প্রস্তাবনায় এসব বিষয় উল্লেখ করে বলা হয়, ‘এ থেকে বোঝা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম কতটা স্থবির।’
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সময়মতো পরীক্ষা না হওয়া ও ফল প্রকাশে দেরির ঘটনা। সব মিলে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় চলছে ‘যেমন খুশি তেমন পদ্ধতিতে’।
তবে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আর আই এম আমিনুর রশিদ দাবি করলেন, ‘ছেলেমেয়েরা যেন শিক্ষা পায়, সে জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি।’
বাস্তবতা কী বলে? শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের কথা বলে তিন বছর মেয়াদি বিএ/বিএসএস স্নাতক কোর্স বন্ধ করে দেওয়া হয়। অথচ ২০০৯ সালে এই কোর্সে ভর্তি হয়েছিল ৩১ হাজার ৯৪০ জন শিক্ষার্থী।
তবে তিন বছর মেয়াদি কোর্স বন্ধ রাখলেও চার বছরের স্নাতক কোর্স চালু করেছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে মাত্র ২৮৬ জন। এবারের বাজেট প্রস্তাবনায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে, এত অল্প শিক্ষার্থী নিয়ে কোনো শিক্ষা কোর্স বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। নীতিনির্ধারকদের আগেই এটা বোঝা উচিত ছিল।
তো, এখন? এখন তিন বছর মেয়াদি ডিগ্রি কোর্স আবার চালু করার প্রস্তুতি চলছে, ভর্তি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। তাহলে গত বছর চালু হওয়া চার বছর মেয়াদি প্রোগ্রামের কী হবে? উপাচার্য বললেন, ‘সেটা থাকবে, অনার্স হিসেবে।’
‘আমি মনে করি, শিক্ষা মানুষের অধিকার। তাই কেউ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে তেমন কাজ করছি না।’
উপাচার্যের এই বক্তব্য আর বাস্তবতা কি এক? গত বছর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কৃষি ও পল্লি উন্নয়ন অনুষদের ব্যাচেলর অব অ্যাগ্রিকালচারাল এডুকেশন (বিএগএড) কোর্স। এ কোর্সে শিক্ষার্থী ২০০৯ সালে ভর্তি হয়েছিল ৫৮৭ জন।
এই শিক্ষা সংকোচন কেন জানতে চাইলে উপাচার্য বললেন, ‘এই কোর্সে পুনরায় ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’ মাঝখানে এক বছর কেন বন্ধ থাকল কোর্সটি? উপাচার্যের দাবি, কোর্সটি মানসম্মত ছিল না বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এটি বন্ধ করতে বলেছিল। আবার ভর্তি শুরু করলে কি মান ঠিক হবে? ‘কিছুটা নতুন আঙ্গিকে শুরুর চেষ্টা আছে’—দাবি উপাচার্যের।
২০১০ সালে এসএসসি ও এইচএসসিতে ভর্তি বন্ধ ছিল: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সহায়তা (স্টুডেন্ট সাপোর্ট) ও পরীক্ষা বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত বছর এসএসসি, এইচএসসিসহ কয়েকটি মূল প্রোগ্রামে ভর্তি বন্ধ ছিল। এর কারণ জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, পাঠ্য একাধিক বইয়ে ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃত ছিল। তখন নতুন বই ছাপানোর সুযোগ ছিল না। তাই ভর্তি নেওয়া হয়নি। এখন বই ছাপানো হয়েছে। ওই শিক্ষাবর্ষের ভর্তি এখন চলছে। উপাচার্য একে ভর্তি বন্ধ বলতে রাজি নন। তাঁর ভাষায় এটা ‘সেশন জট’।
ওপেন স্কুলের ডিন ও ভর্তি কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. সফিউল আলমও বলেছেন, ২০১০ সালে এসএসসি ও এইচএসসিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়নি। তিনি বলেন, এখন ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি চলছে। এই শিক্ষাবর্ষের ভর্তি গত বছরের ডিসেম্বরে হওয়ার কথা ছিল বলে স্বীকার করেন তিনি।
শিক্ষার্থী কমছে: প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালে (২০০৯ শিক্ষাবর্ষ) উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া মোট শিক্ষার্থী ছিল এক লাখ ৪৩ হাজার ৪৫ জন। ২০০৯ সালে (২০১০ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দুই লাখ পাঁচ হাজার ৫৯৯। কিন্তু ২০১০ সালে (২০১১ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি হয় মাত্র চার হাজার ৮২১ জন শিক্ষার্থী।
এই তথ্য উল্লেখ করে শিক্ষার্থী কমার কারণ জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচভিত্তিক শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। এখন একাডেমিক শিক্ষাবর্ষ চালু করা হয়েছে। এ কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বিলম্ব হয়েছে। এখন এসব কোর্সে ভর্তি চলছে।
ভর্তি বন্ধ: ২০১০ সালে আরও যেসব কোর্সে ভর্তি বন্ধ ছিল সেগুলো হলো—মাস্টার্স অব বিজনেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ), কমনওয়েলথ এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিইএমবিএ), কমনওয়েলথ এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিইএমপিএ), মাস্টার্স অব এডুকেশন (এমএড), সার্টিফিকেট অব এডুকেশন (সিএড), হায়ার সেকেন্ডারি সার্টিফিকেট (এইচএসসি), সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), সার্টিফিকেট ইন ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি (সেলপ), সার্টিফিকেট ইন এরাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি (কালপ), ডিপ্লোমা ইন ইয়ুথ ইন ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক (ডিওয়াইডিডব্লিউ), পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ম্যানেজমেন্ট (পিজিডিএম), সার্টিফিকেট ইন ম্যানেজমেন্ট (সিআইএম) কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ ছিল। আর ব্যাচেলর অব আর্টস অ্যান্ড ব্যাচেলর অব সোশ্যাল সায়েন্স (বিএ/বিএসএস), বিএসসি ইন নার্সিং (বিএসএন), ব্যাচেলর অব অ্যাগ্রিকালচারাল এডুকেশন (বিএগএড) প্রোগ্রাম।
এসএসসি ও এইচএসসিতে ভোগান্তির আশঙ্কা: উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি ও এইচএসসি প্রোগ্রামে আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত স্কুল-কলেজে সরাসরি ভর্তি হওয়া যেত। কিন্তু সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ ভর্তির জন্য সারা দেশে মাত্র ১২টি আঞ্চলিক ও ৮০টি কো-অর্ডিনেটিং কেন্দ্র নির্ধারণ করে দিয়েছে। আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ৬৫৬টি টিউটোরিয়াল সেন্টারে (বর্তমানে স্টাডি সেন্টার) এসএসসি এবং ৬৬৯টি টিউটোরিয়াল সেন্টারে এইচএসসিতে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারত।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কেন্দ্র বেঁধে দেওয়ায় ভর্তির ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বাড়ছে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ইন্টারনেট ঘেঁটে ফরম সংগ্রহ করতে পারছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রগুলো জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি আঞ্চলিক কেন্দ্রকে এবার এসএসসি ভর্তির ফরম বিতরণ ও জমা নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীর সংখ্যা আশাব্যঞ্জক না হওয়ায় ৮০টি কো-অর্ডিনেটিং দপ্তরকে ভর্তির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২৬ জুন এসএসসিতে ভর্তির সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও শিক্ষার্থী না পাওয়ায় কর্তৃপক্ষ ১৮ জুলাই পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে।
একই অবস্থা এইচএসসিতেও। শিক্ষার্থী না পাওয়ায় এই প্রোগ্রামেও ভর্তি ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময়সীমা ১৬ জুন থেকে বাড়িয়ে ৩০ জুন করা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, টিউটোরিয়াল সেন্টারে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি তুলে দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের এ দুটি প্রোগ্রামে ভর্তি কমে গেছে।
১২টি আঞ্চলিক কেন্দ্র বেঁধে দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে সমস্যা হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ওপেন স্কুলের ডিন সফিউল আলম। তাঁর ভাষায়, ‘পঞ্চগড়ের একজন ছাত্রকে ভর্তি হতে যদি রংপুরে আসতে হয়, তাহলে তো একটু সমস্যা হবেই।’
তবে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়টি মানতে নারাজ উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘১২টি আঞ্চলিক ও ৮০টি কো-অর্ডিনেটিং কার্যালয়ে ভর্তি চলছে। ভর্তির সময়ও বাড়ানো হয়েছে। তাদের ভোগান্তি হওয়ার কথা নয়।’
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এসএসসি ও এইচএসসি ভর্তির ক্ষেত্রে নেওয়া এই নীতিমালা একাডেমিক কাউন্সিলে পাস করা হয়নি। উপাচার্য একাই তা অনুমোদন দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন।
জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, নীতিমালা একাডেমিক কাউন্সিলে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। শিক্ষার্থীরা যেন ভর্তি হতে পারে সে জন্য উপাচার্যের ক্ষমতাবলে ওই নীতিমালার আওতায় ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
নীতিমালা অনুমোদন ছাড়া কেন ভর্তি করানো হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষানীতির বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আলোচনার পর এটির অনুমোদন হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে না।’
সময়মতো ফল প্রকাশিত হয় না: ২০০৯ ব্যাচের এসএসসি পরীক্ষা হয় ২০১০ সালের ৪ জুন, শেষ হয় ২৩ জুলাই। ফল প্রকাশিত হয় ছয় মাস পর, গত ৯ জানুয়ারি। নিয়ম হলো, তিন মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ করতে হবে।
২০০৮ ব্যাচের বিএড পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০১০ সালের ৩০ মার্চ, শেষ হয় ২০ এপ্রিল। ফল প্রকাশ হয় আট মাস পর, গত ২০ জানুয়ারি।
২০০৯ ব্যাচের এমএড ০৯২ টার্মের পরীক্ষা শুরু হয় গত বছরের ২৬ মার্চ, শেষ হয় ১৬ এপ্রিল। আর ২০০৮ ব্যাচের এমএড পরীক্ষা হয় গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি, শেষ হয় ১৯ মার্চ। দুটো পরীক্ষারই ফল প্রকাশিত হয় সাত-আট মাস পর, গত ৭ নভেম্বর।
প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য প্রোগ্রাম সিএডের ২০০৯ ব্যাচের পরীক্ষা হয় ২১ মে, শেষ হয় ১১ জুন। একই বছরের ১৬ এপ্রিল শুরু হওয়া ২০০৮ ব্যাচের পরীক্ষা শেষ হয় ১৪ মে। দুটো পরীক্ষারই ফল প্রকাশিত হয় গত ২৩ ডিসেম্বর।
২০০৯ ব্যাচের একটি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষা অনুষ্ঠান ও ফল প্রকাশের ক্ষেত্রে মূল দায়িত্ব পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের। ওই কার্যালয় থেকে কেন্দ্রগুলোতে সময়মতো খাতা সরবরাহ না করা, মূল ক্যাম্পাসে খাতা না আসা ও খাতা দেখতে দেরি হওয়ার কারণে ফল প্রকাশে বিলম্ব হয়েছে।
বিলম্বের বিষয়টি স্বীকার করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আসাদুজ্জামান উকিল প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষার কাজে ব্যবহূত সফটওয়্যারে কিছু ত্রুটি ছিল। এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাসংক্রান্ত বেশির ভাগ কাজ ম্যানুয়ালি হয়। তাছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্রে খাতা পাঠানো ও খাতা পেতেও যথেষ্ট সময় লাগে।
ভালো কাজ: ২০০৯ ব্যাচে বিএ/বিএসএস ও এইচএসসি পরীক্ষার ফল যথাসময়ে প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষার জট কমাতে সাম্প্রতিক সময়ে সপ্তাহে দুই দিন করে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষাও দুই দিন করে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপাচার্য আমিনুর রশিদ বলেন, দ্রুত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে, ফল প্রকাশের বিলম্বও কমে যাবে। ভবিষ্যতে সব পরীক্ষাই সপ্তাহে দুটি করে নেওয়া হবে।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons