মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০১১

চুল কেটে নেয়ার পর গৃহবধূ ঘরছাড়া

নির্যাতিত গৃহবধূর চুল কেটেই ক্ষান্ত হয়নি, সন্ত্রাসীরা উল্টো তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। গত ২০শে জুলাই যশোর আদালতে চিহ্নিত ওই সন্ত্রাসীরা তার ও স্বামীর বিরুদ্ধে মাদক বিক্রির অভিযোগ এনে মামলা করে। এতেও সন্ত্রাসীরা ক্ষান্ত হয়নি। তাদেরকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। বর্বরতার শিকার ওই পরিবারটি এখন আশ্রয় নিয়েছে কেশবপুর বাজারের একটি ভাড়া বাসায়। পুলিশের অনৈতিক দাবি এবং সন্ত্রাসীদের তাড়া খাওয়া পরিবারটি এখন নিরাপত্তায় ভুগছে। নির্যাতিত ওই গৃহবধূ জানায়, বেশ কিছু বেসরকারি সংগঠনসহ অনেকে এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু সন্ত্রাসীদের ভয় ও টাকার অভাবে কেউ ধরা দিচ্ছে না। মাথার চুল কাটার পর সামাজিকভাবে ভেঙে পড়েছি। কোথাও বের হতে পারছি না। আত্মহত্যা করা ছাড়া এখন কোন পথ খুঁজে পাচ্ছি না। চুল কাটার পর আমি কয়েকবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেও ফুটফুটে দুই ছেলের দিকে তাকিয়ে ফিরে এসেছি। তারপরও মন মানছে না। বেশি বিপদে পড়েছি আমি মামলা করে। সন্ত্রাসীরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। এমন কি মামলার আইও এসআই উজ্জ্বল আমাকে ভাল রিপোর্ট দেয়ার কথা বলে অনৈতিক কথা বলছে। আসামিদের সঙ্গে আঁতাত করে বান্ডেল বান্ডেল টাকা নিচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ, টাকা নেই বলে আমাদের পাশে কেউ নেই। অভাবের সংসারে প্রায় সময় না খেয়ে স্বামী সন্তান নিয়ে কষ্টে আছি। বড় ছেলেটি অষ্টম শ্রেণীতে পড়ছিল। এখন তাদের কোথায় পড়ালেখা করাবো? সন্ত্রাসীরা আমাকে তা করতে দিল না। মনে হয় আদালতে বিচার পাবো না। কারণ, টাকা নাই। টাকা ছাড়া দেশে বিচারও নাই। যদি থাকত, তাহলে সন্ত্রাসীরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে মাদকদ্রব্য বিক্রির অভিযোগ এনে মিথ্যা মামলা করতে পারত না। তাই আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলাম। উল্লেখ্য, উপজেলার সফরাবাদ গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী নূরনাহারকে এলাকার কতিপয় সন্ত্রাসী যুবক বিভিন্ন সময় নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। নূরুন্নাহার প্রতিবাদ করলে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠে। ১৮ই জুলাই বিকালে ওই গৃহবধূ কেশবপুর থেকে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা আবারও কুপ্রস্তাব দিলে তিনি তাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে চরম প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা তাকে রাস্তায় জাপটে ধরে শীলতাহানীর চেষ্টা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা তার মাথার চুল কেটে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে উল্লাস করে। স্বামী রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তিনি পেশায় একজন করিমন চালক। বাড়িতে ফিরে তিনি ঘটনা জেনে পৌর কাউন্সিলর মনোয়ার হোসেন মিন্টুকে জানান। ওই সময় সন্ত্রাসীরা স্বামী-স্ত্রী দু’জনকে পুনরায় মারপিট করে। ওই ঘটনায় গৃহবধূ নূরন্নাহার কেশবপুর থানায় বাদী হয়ে বখাটে সন্ত্রাসী লিটন, খলিল, আলম, আতিয়ার, সাত্তারের নামে কেশবপুর থানায় মামলা করেন, নং-০৯, তারিখ-১৮/০৭/২০১১ইং। পৌর কাউন্সিলর মনোয়ার হোসেন মিন্টু জানান, তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই সন্ত্রাসীরা ওই গৃহবধূর মাথার চুল কেটে নিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
mzamin.com

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons