মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০১১

ছাত্রী ধর্ষণ মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই

ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের বসুন্ধরা শাখার দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই। গত ২৬ দিনেও পুলিশ এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয়নি। ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষক পরিমল জয়ধর কারাগারে আছেন।
ছাত্রীটির পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত অন্য দুই আসামি কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম ও বসুন্ধরা শাখার প্রধান লু ৎফর রহমানকে গ্রেপ্তার করছে না। তাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার আলামত বিনষ্ট করা, ভয়ভীতি দেখানো ও মেয়েটিকে স্কুল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম শাহাদত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে। তাঁরা যাতে অযথা হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য তাঁদের ব্যাপারে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ছাত্রীটির ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মামলার প্রধান আসামি পরিমল জয়ধরসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, অধ্যক্ষ হোসনে আরা ও শিক্ষক লু ৎফরের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত মেয়েটিকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা ও ভয়ভীতি দেখানোর সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সূত্র জানায়, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি অধ্যক্ষ হোসনে আরা ও ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক লু ৎফর রহমান হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলেও তা মঞ্জুর হয়নি। হাইকোর্ট তাঁদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
ঘটনার শিকার মেয়েটি সিঙ্গাপুর থেকে চিকি ৎসা নিয়ে গত ১৬ জুলাই দেশে ফেরে। পরের দিন মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে তার জবানবন্দি নেওয়া হয়।
মেয়েটির একজন নিকটাত্মীয় অভিযোগ করেন, এজাহারভুক্ত কলেজের অধ্যক্ষ গ্রেপ্তার এড়িয়ে মামলাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য পুলিশকে প্রভাবিত করছেন। তিনি লোক পাঠিয়ে তাঁকে আসামি করার কৈফিয়ত চাচ্ছেন। মামলা করার জন্য তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগই হয়নি। মামলা প্রভাবিত করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
জানতে চাইলে ঢাকা জজ আদালতের আইনজীবী ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারি অপরাধে থানায় মামলা হলে এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে আইনগত বাধা থাকার কথা নয়।
গত ৫ জুলাই ছাত্রীটির বাবা ওই স্কুলের শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে আসামি করে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। এরপর ৭ জুলাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিমলকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ১১ জুলাই তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। জবানবন্দিতে তিনি দুই দফায় মেয়েটিকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons