বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১

হলিউড সুন্দরীদের ‘ফিটনেস রহস্য’





alt


হ-বাংলা  বিনোদন রিপোর্ট : প্রতিটি স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের মনের বড় প্রশ্ন, কিভাবে তারকারা বছরের পর বছরের তাদের তারুণ্য এবং স্বাস্থ্যকে এতো সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন?
সবাই ভাবেন, হয়তো তারা সারাদিন এক বাটি সব্জি অথবা ফল খেয়ে বেঁচে থাকেন। আবার অনেকেই ভাবেন এতো সুন্দর স্বাস্থ্য তারকারা পান সার্জারি, ভিটামিন পিলস আর বিউটি পার্লারে দিনযাপনের মাধম্যে।
কিন্তু এসব আসলে কিছুই না। আসুন জেনে নেয়া যাক কিছু হলিউড সুন্দরীর ‘ফিটনেস রহস্য’।
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

অ্যাঞ্জোলিনা জোলির ডায়েট রহস্যটি আসলে কোনো রহস্যই না। তার মতো ডাযেট এবং ব্যায়াম আমাদের দেশের প্রতিটি গৃহিণীই প্রতিদিন করে থাকেন। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে তারা কেনো জোলির মতো এতো ফিট হতে পারেন না।
আসল ব্যাপার হচ্ছে, জোলির ডায়েটের সবচেয়ে বড় দিকটি হচ্ছে তার পরিমিত খাদ্যাভাস এবং কিছু ছোটখাটো নিয়ম-কানুন। যেমন- পুরো খাবার খাওয়া অর্থাৎ খেতে বসে খাবার নষ্ট না করা, যতটুকুই খাওয়া যায় শান্তভাবে এক জায়গায় বসে খেতে হবে এবং তার খাবার ঘরটি হতে হবে উজ্জ্বল।
শুনতে অবাক লাগলেও এই ‘টুম্ব টাইডার’ তারকা সব ধরনের খাবারই প্রতিদিন খান। তার খাদ্য তালিকায় ফল থেকে শুরু করে গরুর গোশত পর্যন্ত থাকে। কিন্তু সবই একটি পরিমিত পরিমাণে। অনেক বছর আগে, তার খাদ্য তালিকায় শুধু শাক-সব্জিই ছিল, কিন্তু এখন আর তা নেই। এখন তিনি বিশ্বাস করেন যে, শুধু শাক-সব্জি আর ফলমূল খেয়ে স্বাস্থ্যবান থাকা যায় না। ফিট থাকতে হলে সব ধরনের খাদ্যই গ্রহণ করতে হয়। কারণ, একেক ধরনের খাদ্যে একেক ধরনের উপাদান থাকে যা দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জোলির মতে, এসব থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা একদম ঠিক না।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এই সুন্দরী অভিনেত্রী অনেক দিন হলো জিমে যান না। তার কারণ হিসেবে জোলি জানিয়েছেন, জিমে গিয়ে ব্যায়াম করার চেয়ে ঘরে বসেই তিনি অনেক বেশি কাজ করেন। ছয় সন্তানের জননী জোলি কথাটা ভুল বলেননি। কারণ, নিজেকে ফিট রাখতে চাইলে ঘরের কাজ করা এবং ছয় সন্তানকে লালন পালন করাটা জিমে গিয়ে দুই ঘণ্টা ব্যায়ামের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরী। তবে মাঝে মধ্যেই জোলি সময় পেলে বেরিয়ে যান জেট স্কি, আইস স্কেটিং আর পাইলট ক্লাস করতে।
জেনিফার লোপেজ

জেনিফার লোপেজের মতো আকর্ষনীয় দেহগড়ন পেতে হলে অবশ্যই একজনকে মেনে চলতে হবে কঠিন ডায়েট, করতে হবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যায়াম, এমন ভাবটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু লোপেজ আসলে এমন কিছুই করেন না। তার ‘ফিট’ স্বাস্থ্যের রহস্য হলো ‘যোগ ব্যায়াম’।
৪২ বছর বয়সী এই তারকা তার ডায়েট এবং ফিটনেসের ব্যাপারে বলেন, “যদি আমার ডায়েটের ব্যাপারে জানতে চান তবে আমি সবসময়ের মতো এটাই বলবো যে, আমি জানি আমার স্বাস্থ্যের জন্য কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ। তবে মন যদি কিছু চায়, তাকে হতাশ করে কষ্ট দেয়াকে আমি সমর্থন করি না। যদি দেখি ওজন বাড়ছে, তখন আমি শুধু খাদ্য তালিকা থেকে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে দিই।”
তিনি আরো বলেন, “আমি খুব বেশি স্বাস্থ্য সচেতন নই। আমি কখনোই স্বাস্থ্যের কথা বা ওজন বেড়ে যাবার ভয়ে মিষ্টি বা আমার প্রিয় খাবারগুলো খাওয়া বন্ধ করে দিই না। আমি সব কিছুই খাই, কিন্তু একটা নির্দিষ্ট এবং পরিমিত পরিমাণে। আমি অল্প অল্প করে সব কিছুতেই বিশ্বাসী।”
লোপেজ খাওয়ার ব্যাপারে খুব বেশি সচেতন না হলেও যোগব্যায়ামের বেলায় তিনি খুবই সচেতন। প্রতিদিন এর পেছনে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন। প্রথমে তিনি যোগব্যায়াম করেন চিন্তা এবং অবসাদ মুক্ত থাকার জন্য। এরপর কিছুক্ষণ গানের তালে ব্যায়াম করেন যা দেহে অতিরিক্ত মেদগুলো ঝড়িয়ে দেয়। সবশেষে কিছুক্ষণ তিনি ট্রেডমিলে সময় কাটান অথবা একটু সাইকেল চালান।
জেসিকা অ্যালবা

সম্প্রতি দ্বিতীয় সন্তানের মা হলেন জেসিকা অ্যালবা। এ সময় অনেকেই একটু মুটিয়ে যায়। কিন্তু জেসিকাকে দেখে এমনটা মনেই হয় না। হলিউডে অভিষেকের পর অ্যালবা যেমনটি ছিলেন ঠিক তেমনটি এখনো আছেন।
অনেকেরই হয়তো জানা নেই যে, জেসিকার পরিবারের প্রতিটি সদস্যই অসম্ভব মোটা। কিন্তু তাকে দেখে এটা বোঝার উপায়ই নেই।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, “আমি সবসময়ই চাইতাম নিজেকে ফিট রাখতে। তাই আমার বয়স যখন ১২, তখন থেকেই আমি নিজের খাবার নিজেই তৈরি করে খেতাম। এতে আমার ওয়ার্কআউটও হয়ে যেত আবার খাওয়ার রুচিও বাড়তো।”
তিনি তার খাদ্য তালিকার ব্যাপারে বলেন, “আমার সকালের নাস্তায় একদিন থাকে ডিমের অমলেট এবং ফল, আরেক দিন থাকে পনির এবং পিচ ফল। দুপুরে আমি সালাদ খাই। রাতে সব্জি এবং মাছ অথবা মুরগি দিয়ে চালাই। এছাড়াও দিনের বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজন মতো আমি শুকনো এবং হালকা খাবার অথবা একটু চকোলেট অথবা স্ট্রবেরি, ঠাণ্ডা দই খেয়ে থাকি। আমি খুব বেশি মিষ্টি এবং রুটি একদমই খাই না।”
খাদ্য তালিকার আলোচনা শেষে আসে ব্যায়ামের ব্যাপারটি। অ্যালবা জানান, তিনি প্রতিদিন একঘণ্টা সময় তার নিজস্ব জিমে কাটান। সেখানে তিনি ট্রেডমিলে কিছুক্ষণ দৌড়ান, এরপর পুশ-আপ করেন, এরপর আবার ট্রেডমিল। সবশেষে নিজের কাঁধের সৌন্দর্য্যকে ধরে রাখতে কিছু বিশেষ ব্যায়াম করেন যা তার ট্রেইনার তাকে দেখিয়ে দেন।
জেনিফার অ্যানিস্টোন

তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে বয়স তার ৪০ হয়ে গেছে। জেনিফার অ্যানিস্টোনকে দেখলে এখনো মনে হয় ২০’এর কোঠাতেই আছেন তিনি। এই তারুণ্যকে ধরে রাখতে যে তাকে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয় তা কিন্তু না।
তিনি মেক্সিকান খাবার দারুণ পছন্দ করেন। মেক্সিকান কিছু দেখলেই ভুলে যান সব ডায়েটের ব্যাপারে। কিন্তু চর্বি এবং ক্যালোরিযুক্ত খাবার একটু এড়িয়ে চলেন জেনি। তার ডায়েটে থাকে প্রচুর প্রোটিন। তিনি ঘন ঘন অল্প করে কিছু না কিছু সবসময়ই খান। তার মতে এটা তার বিপাক ক্রিয়াকে সবসময় সচল রাখে, এরফলে এটা তার দেহে চর্বি বা মেদ জমতে দেয় না।
জেনিফার অ্যানিস্টোনের খাদ্য তালিকায় যেসব খাবার গুলো প্রায়শ থাকে সেগুলো হলো- আলু, ওটমিল বা জইচূর্ণ, পিনাট বাটার, পনির, ফল এবং বাদাম।
যোগব্যায়ামে বিশ্বাসী জেনি। প্রতিদিন ন্যূনতম ২০ মিনিটের জন্য হলেও যোগব্যায়াম তার করতেই হবে।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons