পারসোনার ক্যামেরা ক্যালেঙ্কারির পর ইন্টারনেটে পর্নোসাইটগুলো সবচেয়ে বেশি হিট হচ্ছে। ইন্টারনেটের সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও ইয়াহুতে পারসোনার পর্নো নিয়ে ব্যাপক খোঁজাখুঁজি চলছে। ইন্টারনেটের সার্চ ইঞ্জিনের হিসাব রাখা ওয়েবসাইট বলছে, অন্তত গত এক সপ্তাহ ধরে এ পর্নো সাইটগুলোতে হামলে পড়ছেন প্রচুর ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।
একই সাথে ব্লগ দুনিয়ায় এখন এটি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছে। সামহয়্যারইনব্লগ, সচলায়তন, বিডিনিউজব্লগ,ফেসবুকসহ বিভিন্ন ব্লগ ও সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। পুলিশ কোনো রকমের ছাড় না দিয়ে তদন্ত করছে বলে বাংলানিউজ শুক্রবার সংবাদ প্রকাশ করেছে।
বিডিনিউজের ব্লগে আইরিন একটি পোস্টে বলেছেন, যে ক্যামেরাটিকে সিসি ক্যামেরা বলে চালানো হচ্ছে, সেটি আদতে আইপি ক্যামেরা কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এটি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, সিসি ক্যামেরার চেয়ে আইপি ক্যামেরা অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। তাই আমাদের এটি জানতে হবে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে ব্যবসায় করছে পারসোনা। তাই পারসোনার সব আউটলেটে অবশ্যই এ ধরনের ক্যামেরা থাকতে পারে, সেটি খুলে নেয়া জরুরি বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।
কানিজ আলমাসের কাছে যে প্রশ্নগুলো রেখেছেন ইন্টারনেট দুনিয়ার পাঠক-লেখকরা, সেগুলো হলো-‘পারসোনায় গ্রাহকদের ব্যক্তিগত জিনিস রাখার জন্য লকার রাখা হয়নি কেন?’, ‘সিসি ক্যামেরা আছে, এমন জায়গাগুলোতে দিজ প্লেস ইজ আন্ডার সার্ভিলেন্সের মতো সতর্ক নোটিশ রাখা হয়নি কেন?’, ‘যে কর্মীরা ভিডিও সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে তাদের ব্যাপারে কী ব্যবস'া নেয়া হয়েছে?’, ‘কোন প্রতিষ্ঠানের, কোন টেকনিশিয়ান ক্যামেরা সেট করে দিয়েছেন?’, ‘আমরা ধরে নেই কেষ্ট বেটাই চোর, তাহলে সেই টেকনিশিয়ানের বিরুদ্ধে কাজে গাফেলতি নিয়ে শোকজ করবেন কি কানিজ আলমাস?’, ‘ত্রুটিপূর্ণ ক্যামেরা সম্পর্কে ডিউটিরত কর্মচারীরা রিপোর্ট করেননি কেন?’, ‘চিকিৎসক গ্রাহকের স্বামীর প্রশ্ন- যদি ব্যাড ইনটেশন না থাকে, তাহলে ওই কক্ষের ক্যামেরা দ্রুততার সাথে সরিয়ে নেয়া হলো কেন?’
এসব প্রশ্নের কোনো জবাব দেয়নি পারসোনা। কেবল বক্তব্য অস্বীকার করে বিবৃতি প্রকাশ করেছে। ফেসবুকে পারসোনার নিজস্ব হোমপেজে বলা হয়েছে, গ্রাহকের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হওয়ার কারণে তারা সিসি ক্যামেরা বসিয়েছেন।
ব্লগাররা প্রশ্ন তুলেছেন এটি কোনোভাবেই যৌক্তিক ব্যাখ্যা হতে পারে না। আইরিন বলছেন, এটি খুবই ন্যক্কারজনক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিডি নিউজের ব্লগে কান্তা লিখেছেন, ‘কানিজ আলমাস ও তার স্বামীর (ইনি পার্সোনার কর্মচারী) শাস্তি হওয়া উচিত। তাদের কোটি কোটি টাকার সম্পদের হিসাব তদন্ত করার জন্য আয়কর বিভাগকে অনুরোধ করছি। নাপিতের ব্যবসায় ছাড়া এদের আর কোনো অবৈধ ব্যবসায় আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া এই জাতীয় ব্যবসায়ের সাথে জড়িত অন্যান্য মহিলা যেমন, ফারজানা শাকিল এবং তার স্বামী শাকিলের (ইনিও কর্মচারী) কার্যকলাপও তদন্ত হওয়া দরকার। তাদের আউটলেটগুলোতে কোনো লিখিত সার্ভিস রেট নেই। তারা মহিলাদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করে থাকেন। ফেসিয়ালের নামে তেঁতুলের পানি আর স্পার নামে মহিলাদের গায়ে কাদামাটি মাখিয়ে এরা ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে থাকেন। পত্রিকার সম্পাদক ও পুলিশের বড় কর্তাদের মনোরঞ্জনের জন্য তাদের এখানে স্পেশাল ব্যবস'া আছে। তাই কোনো পত্রিকায় পারসোনার বিরুদ্ধে লেখা দেখবেন না। মিডিয়ার মেয়েরাও মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন। ’
মায়া রহমান লিখেছেন, ‘অনেক সেলিব্রেটির নগ্ন/ অর্ধনগ্ন ছবি অনলাইনে দেখা যায়। এইবার এর সোর্স বোঝা গেলো। কিন' সেই (কয়েকজন অভিনেত্রীর নাম...) ও অন্যদের কাউকেই কিন' একবারো প্রতিবাদ করতে দেখলাম না। বাংলাদেশের ব্যাপারটা বোঝা আমার কর্ম নয়। ’
ব্লগার কানা বাবা অবশ্য পারসোনা বন্ধের পক্ষে নন। তিনি কিছু নীতিমালা চান, কোথায় কোথায় বসানো যাবে সিসি টিভি ক্যামেরা। তা সরকার যেন নির্ধারণ করে দেয়, সেটি তিনি দাবি করেছেন। একই সাথে পারসোনার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করে বলেছেন, এটি তদন্ত না করা হলে সামনে এ ধরনের ঘটনা বাড়বেই।




২:২৬ PM
Akashnill
Posted in:
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন