
মহেশখালী উপজেলার পৌর এলাকার ১৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহানা আকতার মিলি, হনুফা আকতার মধু ও কাজল। ৭-৮ বছর আগে আসে কক্সবাজারে। এ আসার পেছনেও রয়েছে কাহিনী। তাদের মা খতিজা বেগম জীনের কথা বলে বহু মানুষকে ‘স্বর্ণের ডেক’ পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মাসৎ করে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীরা আইনের আশ্রয় নেয়। এ অবস্থায় তারা মহেশখালী ছাড়তে বাধ্য হয়। কক্সবাজার এসে প্রথমে শহরের মাঝেরঘাট এলাকা বাসা ভাড়া নেয় তারা। খতিজা বেগম লোভ দেখিয়ে অনৈতিক কার্যকলাপ চালাতে থাকে। মায়ের পথ ধরে বড় মেয়ে মিলি। মা ও বড় বোনের সঙ্গে যোগ দেয় হানিফা আকতার মধু-ও। তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের খবর জানাজানি হলে ফুঁসে ওঠে এলাকাবাসী। এক পর্যায়ে বাড়িওয়ালার চাপে বাসা ছাড়ে তারা। এরপর বাসা নেয় টার্মিনাল এলাকায়। সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে চলে আসে বিডিআর ক্যাম্প এলাকায়। তারপর টিএমসি স্কুল সংলগ্ন এলাকায়। সেখান থেকে সিকদার মহেলর পেছনে। সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে বাজারঘাটা রয়েল হোটেলের পেছনে। এভাবে তাদের প্রায় ১৫টি বাসা ছাড়তে হয়। তাদের মধ্যে মধু’র কৌশল একটু ভিন্ন। দেহব্যবসার পাশাপাশি প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে পটু সে। তাদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অনেকে সর্বস্বান্ত হলেও কেউ প্রতিবাদ বা উচ্চবাচ্য করার সাহস পায় না। তা করলেই তার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়া হয়। এভাবে ক্ষতিপূরণ আদায় করার অনেক নজিরও রয়েছে।
২০০৮ সালের ৬ই ডিসেম্বর সদর উপজেলার ভারুয়াখালীর ইসমাইল হোসনকে বিয়ে করে মধু। ২০০৯ সালে ৬ই জুন এ বিয়ে ভেঙে যায়। এক দারোগার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ আদায় করেন ৯৩ হাজার টাকা। কিছুদিন পর সে বিয়ে করে বাংলাবাজার এলাকার শামশুল আলমকে। তার সংসারে থাকতেই শহরের টেকপাড়ার জুবাইদুল ইসলাম বাপ্পীকে বিয়ে করে পালিয়ে গিয়ে। অপরদিকে দুশ্চরিত্র মেয়েকে বিয়ে করার খবর পেয়ে পিতামাতা জুবাইরুলকে ঘর থেকে বের করে দেন। মামলাও করেন। এ মামলায় জেল খাটে জুবাইদুল ও মধু। জেল থেকে বেরিয়ে জুবাইদুল দেখে, যে স্ত্রীর জন্য পিতামাতা ত্যাগ করেছে, সে স্ত্রীর রয়েছে অসংখ্য বয়ফ্রেন্ড। নামীদামি ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ। জুবাইদুলের সন্দেহ হয়। স্ত্রীর ওপর সে তীক্ষ্ণ নজর রাখতে থাকে। কিছুদিন যাওয়ার পর তার কাছে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়। তার অজান্তে প্রিয়তম স্ত্রী মধু এতদিন চালিয়ে যাচ্ছিল দেহ ব্যবসা। বিভিন্ন সময় হোটেল মোটেল জোনসহ বিভিন্ন স্থানে স্ত্রীকে ধরে ফেলে স্বামী। এসব কারণে মধুর প্রতি তার মোহ কেটে যায়। ফলে তাদের এই বিয়েও স্থায়ী হয়নি। জুবাইদুল জানায়, অনেক চেষ্টা করেও স্ত্রীকে ভাল করতে পারেনি সে। পরে অন্যের পরামর্শে তাকে ডিভোর্স দেয় স্ত্রী। বনিবনা না হওয়ায় উভয়ে আলাদা হওয়ার ব্যাপারে একটি অঙ্গীকারনামাও করে। এর কয়েকদিন পরই থানা ও কোর্টে পৃথক দু’টি মামলা করে মধু। জুবাইদুল বলে, প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়া মধুদের কাজ। মধুর বড় ভাই আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী জেসমিন আকতার জানান, মধুদের পরিবারে শহরের নামীদামি ব্যক্তিদের নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে। বিয়ের পরে মধুদের পরিবারে যাওয়ার পর থেকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার জন্য তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। বাসায় আগন্তুক ব্যক্তিদের ‘সেবা’ দেয়ার জন্য তাকে স্বামী-শাশুড়ি-ননদ নিয়মিত অত্যাচার চালাতো। তাদের ধারাবাহিক অত্যাচার ও নির্যাতনে সহ্য করতে না পেরে এক বছর আগে স্বামী-সংসার ছেড়ে চলে এসেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি ১ সন্তানসহ বাপের বাড়িতে থাকছেন। মডেল থানার ওসি (তদন্ত) হারুন অর রশিদ জানান, ২০-২২ দিন হলো আমি মধুকে চিনি। একটি অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করতে আমার কাছ এসেছিল সে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শুনেছি মেয়েটি খারাপ। তার ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। মডেল থানার ওসি বদরুল আলম তালুকদার জানান, মধুর আবেদনের প্রেক্ষিতে তার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই প্রভাত কর্মকারকে পরিবর্তন করে জিসানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর বাইরে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে হনুফা আক্তার মধু বলেন, অভিযোগকারীদের সব অভিযোগ সত্য, আপনারা ভালো করে লিখে দিন।




৫:৪০ PM
Akashnill
Posted in:
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন