আবদুর রহমানসিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া ওই মামলার আসামি ১১ বছরের শিশু আবদুর রহমানসহ তার সাত ভাই এবং দুই মা। গ্রেপ্তার এড়াতে গতকাল পুলিশের অভিযানের সময় তার পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো আবদুর রহমানও পালিয়েছিল। পরে সে তার বড় ভাই ইছুব আলীর সঙ্গে বিকেলে প্রথম আলোর সিলেট কার্যালয়ে এসে ঘটনাটি অবহিত করে।
আবদুর রহমানের বড় ভাই ইছুব আলী (৩৫) জানান, কোম্পানীগঞ্জের উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের বিজয় পাড়ুয়া গ্রামের বাসিন্দা তাঁরা। পারিবারিকভাবে তাঁরা পাথর শ্রমিক। পাশের গ্রাম বনপুরের বাসিন্দা আবদুল মালিক শত্রুতাবশত গত ২৫ নভেম্বর একটি সন্ত্রাসী হামলায় তাঁদের অভিযুক্ত করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় লিখিত এজাহার দেন। তবে এজাহার পাওয়ার পর সরেজমিন কোনো তদন্ত ছাড়াই পুলিশ সেটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। নথিভুক্ত মামলার (১৯/১৩২) প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে ৭ নম্বর আসামি হিসেবে আবদুর রহমানের নাম আছে। সেখানে তার বয়স দেওয়া হয়েছে ১৮।
ইছুব আলী এ সময় ছোট ভাই আবদুর রহমানের জন্মসনদ ও সে যে বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে অধ্যয়নরত—সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের একটি প্রত্যয়নপত্র উপস্থাপন করেন। যোগাযোগ করা হলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফরিদউদ্দিন ও মাঝেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বশির আহমদ আবদুর রহমানের জন্মসনদ ও প্রত্যয়নপত্রে উল্লিখিত বয়স ১১ বছর সঠিক বলে নিশ্চিত করেছেন।
ইছুব বলেন, ‘(সন্ত্রাসী হামলার) ঘটনাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বড়দের বিরোধ থাকতে পারে, ছোট এই বাচ্চাটার কী দোষ? পুলিশ গ্রামে গেছে শুইনা আমার লগে হেও পালাইছে।’
এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই ছেলেটিকে নিয়ে তাঁর পরিবারের লোকজন আমার কাছে এসেছিল। আগামী ৮ ডিসেম্বর তার বার্ষিক পরীক্ষা। আসামি হওয়ায় তার শিশুমনে এক ধরনের ভয় কাজ করছে। ঘটনা যা-ই হোক—কোনোভাবে যেন ছেলেটির পরীক্ষা ব্যাহত না হয়, এ জন্য আমি পুলিশকে বলেছি। কিন্তু মনে হচ্ছে, আমার কথায় পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
কোম্পানীগঞ্জ থানার সূত্র জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোবারক হোসেন গতকাল সকালে আসামি গ্রেপ্তার করতে বিজয় পাড়ুয়া গ্রামে গিয়েছিলেন। তবে রাতে মুঠোফোনে মোবারকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, আসামি গ্রেপ্তারে নয়, ঘটনা সরেজমিনে তদন্ত করতেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ১১ বছরের আবদুর রহমানকে ১৮ বছর উল্লেখ করে মামলা নথিভুক্ত করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাই নাকি! এমন হলে তো আশ্চর্যজনক ঘটনা। ব্যাপারটি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’
মামলার বাদী মো. আবদুল মালিক দাবি করেন, ‘মামলায় যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁরা সবাই আমাদের লাঠি ও দা নিয়ে মারতে এসেছিল।’
অভিযোগের সরেজমিন তদন্ত ছাড়াই মামলা নথিভুক্ত করা প্রসঙ্গে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নন্দনকান্তি ধর প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরেজমিন খোঁজ নিয়েই মামলা নথিভুক্ত হওয়ার নিয়ম। বিষয়টি আমার জানার মধ্যে নেই। যদি এ রকম হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই মামলা থেকে ছেলেটাকে বাদ দেওয়া হবে। prothom-alo




১১:২৫ AM
Akashnill
Posted in:
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন