
ব্যবসা, লেখালেখি, দত্তক মেয়েকে লালন পালন করে সময় কাটছে বিদিশার। তিনি দেড় বছর আগে দত্তক নেয়া মেয়ের নাম রেখেছেন মায়া মিন রানিয়া। আগামী জুলাই মাসে তার জন্ম দিন। তার জন্ম দিন ও মেয়ে ইসাবেলার জন্মদিন পালনের জন্য লন্ডনে যাচ্ছেন বিদিশা। সেখানে বেশ কিছুু দিন থাকবেন।
ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় বিদিশা জানান, সবাই বলছে বিয়ের কথা। এতদিন ভাবতাম বিয়ে-শাদিতে আর জড়াবো না। কারণ, এরশাদের সঙ্গে সংসার জীবন আমার মধুময় ছিল না। তাকে বিয়ে করে আমাকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। অনেক কষ্ট-নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। অপমান সহ্য করতে হয়েছে। এমনকি আদালতে হেনস্তা হতে হয়েছে। এখন মনে হচ্ছে, একজন পুরুষের জন্য এটা মনে করার কোন কারণ নেই। কারণ, সবাই তো আর এরশাদের মতো না। এছাড়াও আমার বাবা, মা, ছেলে, মেয়েরা যখন আমাকে বলছে বিয়ের কথা তখন একটা কিছু করা দরকার। একা সময় কাটানো কঠিন।
বিয়ের দিনক্ষণ জানাতে না পারলেও বিদিশা জানান, আগে তো পাত্র ঠিক হতে হবে। প্রস্তাবের অপেক্ষায় আছি। কবে সেই রাজপুত্র বিয়ের প্রস্তাব দেবে। ফাইটার ফিগার হয়ে গেছি। তাই এখন আর কেউ আমাকে প্রস্তাব দেয় না। মনে করে বিদিশা মানেই ভয়ঙ্কর একটা কিছু। আমাকে সবাই মনে করে ঝামেলা। ইচ্ছা করে কে ঝামেলা নিতে চায় বলুন? হয়তো মানুষ মনে করে বিদিশাকে বিয়ে করলে আবার কোন ঝামেলা হয়। তিনি বলেন, কেন আমাকে ঘর ছাড়তে হয়েছে এটা আমি ছাড়া কেউ জানে না। কোন মেয়েরই অপমান সহ্য করে স্বামীর ঘর করা উচিত নয়। ‘শত্রুর সঙ্গে বসবাস’ আমার বইয়ে লিখেছি সেই সব কথা। ওই বইটি যারা পড়েছেন তারা বুঝবেন আসলে কেন আমাকে ঘর ছাড়তে হলো। আমি কি ঘর টিকিয়ে রাখার জন্য কম চেষ্টা করেছি। আমার পেছনে সারাক্ষণ এরশাদের কান ভারি করার জন্য লোক লাগিয়ে রাখা হতো। রওশনের লোকেরাও আমার বিরুদ্ধে নানা কথা বলতো এরশাদের কাছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতিটা এমন হয়েছিল যে আমার আর সেখানে থাকার উপায় ছিল না। এমনকি আমার বাচ্চা নিয়েও নানা জনে নানা কথা বলেছে। অথচ এটাই সত্য, এরিখ এরশাদেরই সন্তান।
বইতে এরশাদকে নিয়ে অনেক বাড়িয়ে লিখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে- এ কথায় বিদিশা বলেন, মানুষ নিজের সম্পর্কে কেউ বাড়িয়ে লেখে না। এরশাদ নিজেও জানেন তিনি কি করেছেন। এ কারণে বইটি প্রকাশের পর তিনি কোন আপত্তি করেননি। বিয়ের জন্য কেমন পাত্র চান এ প্রশ্নে বিদিশা বলেন, এখনও তেমন পাত্র পাইনি। ক’দিন পরই বয়স হবে ৪১। সেই হিসাবে পাত্রর বয়সও হিসাব করতে হবে। আগে প্রস্তাব পাই, তারপর বিবেচনা। আগেই পছন্দ-অপছন্দ বলে দিলে সমস্যা। বিদিশা জানান, ছেলে এরিখ সপ্তাহের ছুটির দিনের যে কোন একদিন তার কাছে দুই ঘণ্টার জন্য আসে। এরিখকে পুলিশ পাহারায় ও বডি গার্ড দিয়ে পাঠান এরশাদ। ওই লোকজনের সামনেই কথা বলতে হয়। তিনি বলেন, এ সরকারের আমল বলেই আমার ছেলেকে কাছে রাখতে পারলাম না। তারা ক্ষমতাশালী। সেখানে আমার মতো একজন মায়ের কথার কি দাম আছে?
এরশাদ মহাজোট ছাড়ছেন এমন আলোচনা আছে কথা তুললে বিদিশা বলেন, দেখেন এরশাদের এখনও মহাজোট ছাড়ার মতো অবস্থা হয়নি। মহাজোট ছাড়লে তিনি মহাবিপদে পড়ে যাবেন। এরশাদ খুব ভাল করেই জানেন কোন কোন শর্তে তিনি জোটে ঢুকেছিলেন। মহাজোট ছাড়লে কি এমন হতে পারে? জোট গঠনের সময় তো আপনি মধ্যস্থতাকারী একজন ছিলেন তাই না? বিদিশা বলেন, সব কথা বলতে নেই। খালি এটুকু বলতে পারি, তিনি আপাতত মহাজোট ছাড়বেন না। না পাওয়ার বেদনা থেকে তিনি অনেক কথা বলছেন। তবে আমি মনে করি, এরশাদের যদি সাহস থাকে তাহলে অবশ্যই মহাজোট থেকে তার পদত্যাগ করা উচিত।
আপনি কি তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন? বিদিশা বলেন, চ্যালেঞ্জই ধরে নিতে পারেন। কারণ, আমি জানি এই সময়ে তার পদত্যাগ করার সুযোগ থাকলেও উপায় নেই। তাকে বাধ্য হয়ে জোটে থাকতে হবে। আসলে ওনারা তো প্রভাবশালী মানুষ তাই অনেক কথাই বলেন। সব কথা ধরতে নেই। কারণ ওনাদের অনেক কথার দাম নেই।
তিনি বলেন, আমি কিছু করতে চাই মানেই রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকবো এমনটা বলবো না। রাজনীতি ছাড়াও সামাজিক অনেক কাজ কর্ম আছে যেগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকা যায়। আমি সামাজিক কাজ কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই। এছাড়াও ধানমন্ডিতে রেস্টুরেন্টের ব্যবসাও দেখছি। বই লিখছি। লেখালেখিটা চালিয়ে যাবো।
এখন কি লিখছেন- জানতে চাইলে বিদিশা বলেন, আমার আরও কয়েকটি বই লেখার পরিকল্পনা রয়েছে। এখন একটি বই লিখছি ‘এরিখের অপেক্ষায়’ অথবা এ‘রিখের প্রতীক্ষায় আছি’ নামে।




১:২৮ PM
Akashnill
Posted in:
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন