পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ ওহাব খান জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়া থেকে ডক্টর অব মেডিসিন (এমডি) ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সেই ডিগ্রি দেখিয়ে দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসকদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। তবে ডিগ্রির কোনো সনদ তিনি পুলিশকে দেখাতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার থেকে ওহাব খানকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ (রিমান্ড) করছে হাজারীবাগ থানার পুলিশ। হাজারীবাগ থানায় জয়নুল হক সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়ের করা একটি মামলায় ওহাব খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাজারীবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজুল ইসলাম গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ওহাব পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়া থেকে এমডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তবে এই ডিগ্রির কোনো সনদ তিনি দেখাতে পারেননি।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ওহাব আত্মবিশ্বাস নিয়েই এখন পর্যন্ত পুলিশের কথার জবাব দিচ্ছেন। তিনি পুলিশকে বলেছেন, ১৯৮৫ সালে তিনি রাশিয়া যান। ১৯৯১ সালে এমডি ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার পর ওই ডিগ্রি দেখিয়ে দেশের প্রখ্যাত তিনজন চিকিৎসকের সঙ্গে তিনি কাজও করেছেন।
ওহাব পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাজ করেছেন। এরপর সিকদার মেডিকেলে যোগ দেন। তবে কোনো হাসপাতালেই তাঁর জীবনবৃত্তান্ত জমা দেননি। সিকদার মেডিকেলে চাকরি নেওয়ার সময় দুজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা সুপারিশ করেছিলেন তাঁর জন্য।
পুলিশকে ওহাব জানান, তিনি (ওহাব) চারটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী তাঁকে তালাক দিয়ে চলে গেছেন। সেই ঘরে তাঁর একটি ছেলে রয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রী এখনো তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। তৃতীয় স্ত্রী গর্ভাবস্থায় মারা গেছেন। চতুর্থবার তিনি সিকদার মেডিকেলের গুলশান শাখার এক কর্মকর্তাকে বিয়ে করেন। সেই স্ত্রীও বর্তমানে রয়েছেন।
উত্থান সম্পর্কে পুলিশকে ওহাব জানিয়েছেন, গ্রামের বাড়িতে তিনি এক চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁর চেম্বারে গিয়ে প্রায়ই বসতেন। সেখান থেকে তিনি এ পেশা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। ওহাব এইচএসসি পাসের পর রাশিয়ায় গিয়ে ডিগ্রি নেন বলে পুলিশকে জানান।
একটি ভুল চিকিৎসার অভিযোগের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে এ ওহাব খান সম্পর্কে জানতে পারে প্রথম আলো। গত ৯ মে প্রথম আলোতে ‘অজ্ঞ থেকে বিশেষজ্ঞ’ শিরোনামে এ ওহাব খানের প্রতারণা নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর সিকদার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ হাজারীবাগ থানায় ওহাবের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করে।




১২:১৯ PM
নামহীন
Posted in:
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন