ভোলায় নিম্নচাপের প্রভাবে গত চার দিনে জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসে পাঁচ হাজারেরও বেশি ঘর ভেসে গেছে। জলোচ্ছ্বাস ও প্রবল বর্ষণে বরগুনার অনেক স্থানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। কক্সবাজারের টেকনাফের ৪৭টি গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িঘরই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
এসব এলাকার ঘর হারানো ও জলাবদ্ধতার কবলে পড়া হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকেরই দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। এ ছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে অনেক এলাকায় ব্যাপক ফসলহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে ঝড়ের কবলে পড়ে পথ হারিয়ে বাংলাদেশের জলসীমায় চলে আসা ৭৯ জন ভারতীয় জেলেকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বিচারিক হাকিম। অন্যদিকে কলাপাড়ার এক জেলেকে সাগর থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
মাওয়া-কাওরাকান্দি ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে গতকাল রোববার ফেরি চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। তবে উভয় পারে দীর্ঘ যানজট থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ কমেনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের একটি সূত্র বাসসকে জানায়, স্থল নিম্নচাপটি ক্রমে দুর্বল হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
ভোলা: জেলায় বিধ্বস্ত পাঁচ হাজার ঘরের মধ্যে এক হাজারই দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর ও ভবানীপুর ইউনিয়নের।
সরেজমিনে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করে দেখা যায়, গত শনিবার রাতে সৈয়দপুর ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক ঘর পড়ে গেছে। ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মেজবাহউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টি, ঝড়, আর অস্বাভাবিক জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসে সৈয়দপুরের দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বাঁধের বাইরের ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও বাঁধের ভেতরের মানুষ চার দিন ধরে পানিবন্দী। বারবার জোয়ারের আঘাতে পানিবন্দী ঘরগুলোর ভিটের মাটি ধুয়ে যাচ্ছে। শনিবার রাত থেকে অনেক ঘর ভেসে যাচ্ছে, অনেকগুলো ভেঙে পড়তে শুরু করেছে।
গতকাল দেখা যায়, ভবানীপুর ও সৈয়দপুর ইউনিয়নের ঘরহারা মানুষ এলাকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। ভবানীপুর ইউনিয়নের বাঁধের বাইরের প্রায় সব ঘর ভেসে গেছে।
দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, ভবানীপুর, সৈয়দপুর ইউনিয়নের প্রায় আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
টেকনাফ (কক্সবাজার): উপজেলার ৪৭টি গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেক পরিবার অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
গত বুধবার বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট মৌসুমি নিম্নচাপের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক ঘর থেকে চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও আসবাব জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। ২০টি গ্রামের অনেক ঘরবাড়িতে এখনো জলোচ্ছ্বাস ও পাহাড়ি ঢলের পানির আসা-যাওয়া চলছে। এ অবস্থায় ঘরের ভেতরে মাচা বেঁধে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে ঘরের বাসিন্দাদের।
গত শুক্রবার রাতে ও গতকাল সকালে পৌরসভার উত্তর ও দক্ষিণ জালিয়াপড়া, চৌধুরীপাড়া, সাইথপাড়া, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে কোমরপানি।
অনেককে বাঁধের ওপর পলিথিন দিয়ে ঝুপড়িঘর বানিয়ে রাত কাটতে দেখা গেছে।
দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার জেলে সুলতান আহমদ ও দিনমজুর বশির আহমদ বলেন, পাঁচ দিন হয়ে গেলেও তাঁরা এখনো কোনো ত্রাণসহায়তা পাননি।
বরগুনা: নিম্নচাপের প্রভাবে চার দিনের অব্যাহত জলোচ্ছ্বাস ও প্রবল বর্ষণে বরগুনার অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। আউশ খেত জলমগ্ন হয়ে পড়ায় ব্যাপক ফসলহানির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
গতকাল রোববার বরগুনা সদর উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ফসলের খেত জোয়ারের পানিতে ডুবে আছে। দক্ষিণ খাজুরতলা গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি পানিতে ডুবে থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বাসিন্দারা। আশপাশের প্রায় ৫০টি ঘরের বাসিন্দাদের একই রকমের দুরবস্থা চোখে পড়ে। চর খাজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বসবাসরত ৬০টি ও আশপাশের আরও কমপক্ষে ৫০টি পরিবার দুর্বিষহ অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, জেলায় এ বছর ৪৩ হাজার ৫৬১ হেক্টর জমিতে আউশ ও উচ্চফলনশীল ব্রি ধানের আবাদ হয়েছে। তাঁদের হিসাবে প্রায় সাড়ে ৩০০ হেক্টর জমির ফসল জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে।
পাউবোর বরগুনা কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী গাজী ইয়ার আলী জানান, এ পর্যন্ত জেলার ১৯টি স্থানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পটুয়াখালী: গতকাল দুপুরে কলাপাড়া থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে তুফাইন্যার চরসংলগ্ন সাগরে ১০-১২টি প্লাস্টিকের ফ্লোট (ভাসা) ধরে অচেতন অবস্থায় সাগরে ভাসছিলেন সোনা মিয়া নামের এক জেলে। ওই সময় সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন কলাপাড়ার নীলগঞ্জ এলাকার জেলে আজিজুল। তিনি সোনা মিয়াকে উদ্ধার করে মহিপুরে নিয়ে আসেন। তাঁকে কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সোনা মিয়ার বাড়ি কক্সবাজারে। তিনি জানান, ১৫ জন জেলেসহ তিনি গভীর সাগরে মাছ ধরছিলেন। বুধবার রাতে ঝড়ের কবলে পড়ে তাঁদের ট্রলারটি ডুবে যায়।
এদিকে ঝড়ের কবলে পড়ে পথ হারিয়ে গত দুই দিনে বাংলাদেশের জলসীমায় চলে আসা ৭৯ জন ভারতীয় জেলে এখন নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছেন।
গত শুক্রবার এফবি নারায়ণ নামের একটি ভারতীয় মাছ ধরার ট্রলার ১৫ জন জেলেসহ কলাপাড়া ফেরিঘাট এলাকায় চলে আসে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। পরদিন সকালে আরও ৬৪ জন জেলেসহ চারটি ভারতীয় মাছ ধরার ট্রলার কুয়াকাটা ও আলীপুরে আসে। এসব জেলের বাড়ি ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ এলাকায়।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসহাক আলী জানান, ভারতীয় জেলেদের কলাপাড়া বিচারিক হাকিমের আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাঁদের নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মাওয়া-কাওরাকান্দি নৌপথ: গত শনিবার মাওয়া-কাওরাকান্দি নৌপথে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল শুরু হলেও এখনো স্বাভাবিক হয়নি।
সূত্র জানায়, মাঝনদীতে প্রচণ্ড ঢেউ থাকায় ফেরিগুলো বহনক্ষমতার চেয়ে কম গাড়ি নিয়ে নদী পার হচ্ছে। ফলে উভয় ঘাটে যানজট লেগে আছে।
নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ থাকায় ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চ ও সি-বোট চলাচল করছে।
দাকোপ ও কয়রার বেড়িবাঁধে ফাটল: তিন দিনের টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে খুলনার কয়রা ও দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন বাঁধে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শনিবার দাকোপ এলাকার গোলবুনিয়া ক্লোজারের দুটি স্থানে ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করলে স্থানীয় জনসাধারণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে তা মেরামত করে। এ ছাড়া জালিয়াখালী পয়েন্টেও ভাঙন দেখা দিয়েছে।
কয়রা এলাকার কাঠকাটা, ৪ নম্বর কয়রা, গড়িয়াবাড়ি, হরিহরপুর, বীণাপানি, মঠবাড়ি ও গোবরা-কাটাখালী পয়েন্টে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া পানি বেড়ে যাওয়ায় দক্ষিণ বেদকাশির ১৭টি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
এসব এলাকার ঘর হারানো ও জলাবদ্ধতার কবলে পড়া হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকেরই দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। এ ছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে অনেক এলাকায় ব্যাপক ফসলহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে ঝড়ের কবলে পড়ে পথ হারিয়ে বাংলাদেশের জলসীমায় চলে আসা ৭৯ জন ভারতীয় জেলেকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বিচারিক হাকিম। অন্যদিকে কলাপাড়ার এক জেলেকে সাগর থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
মাওয়া-কাওরাকান্দি ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে গতকাল রোববার ফেরি চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। তবে উভয় পারে দীর্ঘ যানজট থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ কমেনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের একটি সূত্র বাসসকে জানায়, স্থল নিম্নচাপটি ক্রমে দুর্বল হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
ভোলা: জেলায় বিধ্বস্ত পাঁচ হাজার ঘরের মধ্যে এক হাজারই দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর ও ভবানীপুর ইউনিয়নের।
সরেজমিনে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করে দেখা যায়, গত শনিবার রাতে সৈয়দপুর ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক ঘর পড়ে গেছে। ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মেজবাহউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টি, ঝড়, আর অস্বাভাবিক জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসে সৈয়দপুরের দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বাঁধের বাইরের ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও বাঁধের ভেতরের মানুষ চার দিন ধরে পানিবন্দী। বারবার জোয়ারের আঘাতে পানিবন্দী ঘরগুলোর ভিটের মাটি ধুয়ে যাচ্ছে। শনিবার রাত থেকে অনেক ঘর ভেসে যাচ্ছে, অনেকগুলো ভেঙে পড়তে শুরু করেছে।
গতকাল দেখা যায়, ভবানীপুর ও সৈয়দপুর ইউনিয়নের ঘরহারা মানুষ এলাকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। ভবানীপুর ইউনিয়নের বাঁধের বাইরের প্রায় সব ঘর ভেসে গেছে।
দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, ভবানীপুর, সৈয়দপুর ইউনিয়নের প্রায় আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
টেকনাফ (কক্সবাজার): উপজেলার ৪৭টি গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেক পরিবার অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
গত বুধবার বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট মৌসুমি নিম্নচাপের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক ঘর থেকে চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও আসবাব জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। ২০টি গ্রামের অনেক ঘরবাড়িতে এখনো জলোচ্ছ্বাস ও পাহাড়ি ঢলের পানির আসা-যাওয়া চলছে। এ অবস্থায় ঘরের ভেতরে মাচা বেঁধে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে ঘরের বাসিন্দাদের।
গত শুক্রবার রাতে ও গতকাল সকালে পৌরসভার উত্তর ও দক্ষিণ জালিয়াপড়া, চৌধুরীপাড়া, সাইথপাড়া, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে কোমরপানি।
অনেককে বাঁধের ওপর পলিথিন দিয়ে ঝুপড়িঘর বানিয়ে রাত কাটতে দেখা গেছে।
দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার জেলে সুলতান আহমদ ও দিনমজুর বশির আহমদ বলেন, পাঁচ দিন হয়ে গেলেও তাঁরা এখনো কোনো ত্রাণসহায়তা পাননি।
বরগুনা: নিম্নচাপের প্রভাবে চার দিনের অব্যাহত জলোচ্ছ্বাস ও প্রবল বর্ষণে বরগুনার অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। আউশ খেত জলমগ্ন হয়ে পড়ায় ব্যাপক ফসলহানির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
গতকাল রোববার বরগুনা সদর উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ফসলের খেত জোয়ারের পানিতে ডুবে আছে। দক্ষিণ খাজুরতলা গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি পানিতে ডুবে থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বাসিন্দারা। আশপাশের প্রায় ৫০টি ঘরের বাসিন্দাদের একই রকমের দুরবস্থা চোখে পড়ে। চর খাজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বসবাসরত ৬০টি ও আশপাশের আরও কমপক্ষে ৫০টি পরিবার দুর্বিষহ অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, জেলায় এ বছর ৪৩ হাজার ৫৬১ হেক্টর জমিতে আউশ ও উচ্চফলনশীল ব্রি ধানের আবাদ হয়েছে। তাঁদের হিসাবে প্রায় সাড়ে ৩০০ হেক্টর জমির ফসল জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে।
পাউবোর বরগুনা কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী গাজী ইয়ার আলী জানান, এ পর্যন্ত জেলার ১৯টি স্থানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পটুয়াখালী: গতকাল দুপুরে কলাপাড়া থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে তুফাইন্যার চরসংলগ্ন সাগরে ১০-১২টি প্লাস্টিকের ফ্লোট (ভাসা) ধরে অচেতন অবস্থায় সাগরে ভাসছিলেন সোনা মিয়া নামের এক জেলে। ওই সময় সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন কলাপাড়ার নীলগঞ্জ এলাকার জেলে আজিজুল। তিনি সোনা মিয়াকে উদ্ধার করে মহিপুরে নিয়ে আসেন। তাঁকে কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সোনা মিয়ার বাড়ি কক্সবাজারে। তিনি জানান, ১৫ জন জেলেসহ তিনি গভীর সাগরে মাছ ধরছিলেন। বুধবার রাতে ঝড়ের কবলে পড়ে তাঁদের ট্রলারটি ডুবে যায়।
এদিকে ঝড়ের কবলে পড়ে পথ হারিয়ে গত দুই দিনে বাংলাদেশের জলসীমায় চলে আসা ৭৯ জন ভারতীয় জেলে এখন নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছেন।
গত শুক্রবার এফবি নারায়ণ নামের একটি ভারতীয় মাছ ধরার ট্রলার ১৫ জন জেলেসহ কলাপাড়া ফেরিঘাট এলাকায় চলে আসে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। পরদিন সকালে আরও ৬৪ জন জেলেসহ চারটি ভারতীয় মাছ ধরার ট্রলার কুয়াকাটা ও আলীপুরে আসে। এসব জেলের বাড়ি ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ এলাকায়।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসহাক আলী জানান, ভারতীয় জেলেদের কলাপাড়া বিচারিক হাকিমের আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাঁদের নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মাওয়া-কাওরাকান্দি নৌপথ: গত শনিবার মাওয়া-কাওরাকান্দি নৌপথে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল শুরু হলেও এখনো স্বাভাবিক হয়নি।
সূত্র জানায়, মাঝনদীতে প্রচণ্ড ঢেউ থাকায় ফেরিগুলো বহনক্ষমতার চেয়ে কম গাড়ি নিয়ে নদী পার হচ্ছে। ফলে উভয় ঘাটে যানজট লেগে আছে।
নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ থাকায় ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চ ও সি-বোট চলাচল করছে।
দাকোপ ও কয়রার বেড়িবাঁধে ফাটল: তিন দিনের টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে খুলনার কয়রা ও দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন বাঁধে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শনিবার দাকোপ এলাকার গোলবুনিয়া ক্লোজারের দুটি স্থানে ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করলে স্থানীয় জনসাধারণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে তা মেরামত করে। এ ছাড়া জালিয়াখালী পয়েন্টেও ভাঙন দেখা দিয়েছে।
কয়রা এলাকার কাঠকাটা, ৪ নম্বর কয়রা, গড়িয়াবাড়ি, হরিহরপুর, বীণাপানি, মঠবাড়ি ও গোবরা-কাটাখালী পয়েন্টে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া পানি বেড়ে যাওয়ায় দক্ষিণ বেদকাশির ১৭টি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।




১১:৫৮ AM
Akashnill
Posted in:
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন