শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০১১

 ভেতরে পরীক্ষা, বাইরে সার্কাস

স্কুল ভবনের ভেতর চলছে শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা, আর বাইরে স্কুলের মাঠেই চলছে সার্কাসের গানবাজনা। দর্শকদের চিৎকার-চেঁচামেচি, ঢোলের বাজনা, আর বাঁশির সুর শিক্ষার্থীদের অন্যমনস্ক করে তুলছে। এ অবস্থা ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ইদ্রাকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের।
বিদ্যালয়ের পরীক্ষা শুরুর মাত্র দুই দিন আগে, অর্থাৎ সার্কাস শুরু হয়েছে ১৯ জুলাই। প্রতিদিন বেলা একটা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চারটি শো চলে এ সার্কাসের। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ হয় বেলা একটায়। বেলা দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পরীক্ষা থাকলেও সার্কাসের কারণে তা বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহেশপুর উপজেলার ইদ্রাকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫০৬ জন ছাত্রছাত্রী পড়ালেখা করে। ইদ্রাকপুরসহ পার্শ্ববর্তী মান্দারতলা, জাগুসা, গয়েসপুর ও আলীপুর গ্রামের ছেলেমেয়েরা এখানে পড়ালেখা করে। এর মধ্যে এবার দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় ৩৬৪ জন অংশ নিচ্ছে। ২১ জুলাই থেকে তাদের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পরীক্ষার মধ্যে স্কুলের মাঠে গানবাজনা চলে, এটা কীভাবে সম্ভব? তাঁরা উপায় না পেয়ে সার্কাস বন্ধের জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন। কিন্তু কাউকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখেননি।
অষ্টম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, সার্কাসকে কেন্দ্র করে স্কুলের মাঠে বেশ কিছু দোকান বসেছে। সকাল থেকেই সেখানে কেনাবেচা শুরু হয়। যে কারণে চিৎকার-চেঁচামেচি চলে পরীক্ষার সময়। বাইরে গোলমাল চলায় ভেতরে তারা ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে পারে না।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সার্কাসের কারণে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে না এটা বলা যাবে না। তবে এলাকার লোকজন চেয়েছেন, তাই সার্কাস হচ্ছে।’ এর বেশি তিনি কিছু বলতে চাননি।
সার্কাসের আয়োজকদের একজন উপজেলার লাটিমা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন জানান, শিক্ষার্থীদের খুব একটা ক্ষতি হচ্ছে না। কারণ, পরীক্ষার পর সার্কাস শুরু হয়। তিনি আরও জানান, এলাকার একজন অভিভাবকও বলতে পারবেন না যে এ সার্কাসের কারণে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা নষ্ট হচ্ছে।
মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান জানান, সার্কাস অনুমোদনের আগে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা অনুমতির বিষয়ে মত দিয়েছেন। এখন তাঁরা নানা কথা বলছেন।প্রথম আলো

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons