দুই বছরে প্রায় ১২ কোটি টাকার অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনেছে জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইসিভিডি)। বায়োজিন ফার্মা এ যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে আরও পাঁচ-ছয় কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনার প্রক্রিয়া চলছে।
ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকেরা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতা এই যন্ত্রপাতি কিনতে বাধ্য করছেন। বায়োজিন ফার্মা ওই নেতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউটের সাবেক একজন পদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বায়োজিন ফার্মার মাধ্যমে ব্যয়বহুল, কম প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনতে বাধ্য করছেন আওয়ামী লীগের ওই নেতা। এনআইসিভিডির বাইরে অন্যান্য মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালেও তিনি প্রভাব খাটাচ্ছেন। চিকিৎসকেরা ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
ওই ইনস্টিটিউটের অন্তত ছয়জন চিকিৎসক একই অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মো. সিফায়েতউল্লাহ বলেন, জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ কেনাকাটার অনিয়ম নিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। এই অনিয়মের সঙ্গে কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে ইনস্টিটিউটের পরিচালক আবদুল্লাহ আল শাফি মজুমদার এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন।
নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ২০০৯ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে কেনা যন্ত্রপাতির মধ্যে আছে দুটি রেনাল গার্ড, একটি স্টেম সেল থেরাপি মেশিন ও দুটি ইইসিপি মেশিন। দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, অপ্রয়োজনীয় আরও কিছু যন্ত্রপাতির নাম যুক্ত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নতুন তালিকা পাঠিয়েছে। তালিকা থেকে নির্দিষ্ট কিছু যন্ত্রপাতির নাম যেন ইনস্টিটিউটের ক্রয় কমিটি বাদ না দেয়, সে জন্য কর্তৃপক্ষকে হুমকি দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের ওই নেতা ও তাঁর লোকজন।
তবে ওই নেতা বায়োজিন ফার্মার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রথমে তিনি বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটা সম্পর্কে তাঁর জানার কথা নয়। পরে বলেন, স্বাস্থ্য খাতে যুগান্তকারী যে সংস্কার চলছে, তার সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত। তাঁর দাবি, হূদরোগ ইনস্টিটিউটে অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা হয়নি। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারা চিকিৎসকদের ব্যর্থতা।
বায়োজিন ফার্মার চেয়ারম্যান মো. শাফায়াতুল ইসলামও যন্ত্রপাতি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের চাহিদার ভিত্তিতে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের কোনো নেতার সঙ্গে তিনি বা তাঁর প্রতিষ্ঠান যুক্ত নয়। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমন্ডি ৮ নম্বরে ওই বায়োজিন ফার্মার অফিসে গিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগের ওই নেতা এ অফিসে শাফায়াতুল ইসলামের পাশের কক্ষে বসেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যয়বহুল বেসরকারি হাসপাতালের হূদেরাগ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এসব যন্ত্রপাতি চালানোর মতো বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশে নেই। একজন বিশেষজ্ঞ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অলংকার পরলে তো অলংকারের শেষ নেই। কিন্তু দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষকে সেবা দিতে যেসব যন্ত্রপাতি দরকার আগে সেগুলো কেনা উচিত।’
হূদরোগ ইনস্টিটিউটের কয়েকজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানটিতে তিন বছরের কম বয়সী রোগীদের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা মাঝে বন্ধ ছিল। কারণ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) প্রস্তুত ছিল না। এখন অস্ত্রোপচার চালু হলেও এ ব্যবস্থার মান নিয়ে চিকিৎসকেরাই সন্তুষ্ট নন। তা ছাড়া রোগীর সার্বক্ষণিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য কার্ডিয়াক মনিটর দরকার। ৪২টির মধ্যে ২৫টি এক বছর ধরে নষ্ট। বিপুলসংখ্যক রোগীর চিকিৎসায় ইসিজি ও ইকো মেশিন দরকার। অতি প্রয়োজনীয় এসব যন্ত্রপাতি জরুরি ভিত্তিতে কেনা দরকার।
ইনস্টিটিউট সূত্র জানিয়েছে, বায়োজিন ফার্মা একচেটিয়া কাজ শুরু করে ২০০৯ সালে। ওই বছর ৩০ মে ও ৫ জুন এক কোটি টাকা মূল্যের দুটি রেনাল গার্ড যন্ত্র সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি।
চিকিৎসকেরা জানান, রোগীর শরীরে পানি ও লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে রেনাল গার্ড ক্ষতি কমিয়ে আনে। কিন্তু সরবরাহ করা যন্ত্র দুটির একটিও কাজ করছে না। ২০০৯ সালের ৮ জুন যন্ত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক খন্দকার শহীদ হোসেন ও এম জালাল উদ্দিন লিখিত মন্তব্য দেন, যন্ত্র দুটি রোগীর শরীরে পানি ও লবণের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম।
তখন ক্রয় কমিটির সভাপতি ছিলেন কার্ডিওভাসকুলার সার্জারি বিভাগের খাজা এন মাহমুদ। তিনিই সই করে যন্ত্র দুটি গ্রহণ করেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে যন্ত্র দুটি বায়োজিন ফার্মার কাছ থেকে বুঝে নিয়েছিলেন। সচল না অচল তা জানা ছিল না।’ তবে এখন যন্ত্র দুটি পড়ে আছে। নতুন একটি রেনাল গার্ড যন্ত্র কেনার প্রক্রিয়া চলছে।
ওই বছর বায়োজিন ফার্মা চার কোটি ১৬ লাখ ২৭ হাজার টাকা দামের একটি টিএমআর যন্ত্র ও ৯৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা দামের একটি ইইসিপি যন্ত্র দেয়। যেসব রোগীর এনজিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারি করা যায় না, তাদের চিকিৎসায় এই যন্ত্র দুটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটি চার কোটি ৭৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা দামের স্টেম সেল থেরাপি যন্ত্র ও ২০১১ সালে আরও একটি ইইসিপি মেশিন দেয়। যাদের হূৎপিণ্ডের মাংসপেশি অত্যন্ত দুর্বল, স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে তাদের হূৎপিণ্ডের গায়ে রক্ত চলাচল উন্নত করা যায়।
সূত্র জানায়, স্টেম সেল থেরাপি যন্ত্র ও ইইসিপি চালানো শেখাতে ইনস্টিটিউটের কয়েকজনকে বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল বায়োজিন ফার্মার। কিন্তু তারা তা করেনি। এখন দুটি ইইসিপি যন্ত্র নষ্ট। নতুন একটি যন্ত্র আসছে। অন্যদিকে, স্টেম সেল থেরাপি যন্ত্রটিও অচল পড়ে আছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিঠি: কম প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির তালিকা আমলে না নেওয়ায় জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালককে ২০ জুন কড়া চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিছুদিন আগে ইনস্টিটিউটকে যন্ত্রপাতির একটি তালিকা পাঠায়। ওই তালিকায় ৯০ লাখ টাকা দামের দুটি স্ফিগমোকর যন্ত্র, এক কোটি ১০ লাখ টাকা দামের ইইসিপি যন্ত্র ও ৫০ লাখ টাকা দামের স্পার্টান (ডিএনএ টেস্ট ডিভাইস) আছে। কর্তৃপক্ষ কম প্রয়োজনীয় যন্ত্র বাদ দিয়ে খুব প্রয়োজন এমন যন্ত্রপাতির একটি তালিকা পাঠায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ২০ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর লেখে, ইনস্টিটিউটকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। সেই তালিকা থেকে যন্ত্র না বেছে কেন নিজেদের প্রয়োজনীয় যন্ত্রের নাম পাঠানো হলো তা জানাতে বলা হয়।
কিনছে অন্য প্রতিষ্ঠানও: খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালেও বায়োজিন ফার্মা ইইসিপি যন্ত্র সরবরাহ করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের ওই নেতা ইইসিপি যন্ত্র এখানেও দিতে চেয়েছিলেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রতিরোধের মুখে সফল হননি।
ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকেরা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতা এই যন্ত্রপাতি কিনতে বাধ্য করছেন। বায়োজিন ফার্মা ওই নেতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউটের সাবেক একজন পদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বায়োজিন ফার্মার মাধ্যমে ব্যয়বহুল, কম প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনতে বাধ্য করছেন আওয়ামী লীগের ওই নেতা। এনআইসিভিডির বাইরে অন্যান্য মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালেও তিনি প্রভাব খাটাচ্ছেন। চিকিৎসকেরা ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
ওই ইনস্টিটিউটের অন্তত ছয়জন চিকিৎসক একই অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মো. সিফায়েতউল্লাহ বলেন, জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ কেনাকাটার অনিয়ম নিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। এই অনিয়মের সঙ্গে কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে ইনস্টিটিউটের পরিচালক আবদুল্লাহ আল শাফি মজুমদার এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন।
নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ২০০৯ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে কেনা যন্ত্রপাতির মধ্যে আছে দুটি রেনাল গার্ড, একটি স্টেম সেল থেরাপি মেশিন ও দুটি ইইসিপি মেশিন। দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, অপ্রয়োজনীয় আরও কিছু যন্ত্রপাতির নাম যুক্ত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নতুন তালিকা পাঠিয়েছে। তালিকা থেকে নির্দিষ্ট কিছু যন্ত্রপাতির নাম যেন ইনস্টিটিউটের ক্রয় কমিটি বাদ না দেয়, সে জন্য কর্তৃপক্ষকে হুমকি দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের ওই নেতা ও তাঁর লোকজন।
তবে ওই নেতা বায়োজিন ফার্মার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রথমে তিনি বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটা সম্পর্কে তাঁর জানার কথা নয়। পরে বলেন, স্বাস্থ্য খাতে যুগান্তকারী যে সংস্কার চলছে, তার সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত। তাঁর দাবি, হূদরোগ ইনস্টিটিউটে অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা হয়নি। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারা চিকিৎসকদের ব্যর্থতা।
বায়োজিন ফার্মার চেয়ারম্যান মো. শাফায়াতুল ইসলামও যন্ত্রপাতি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের চাহিদার ভিত্তিতে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের কোনো নেতার সঙ্গে তিনি বা তাঁর প্রতিষ্ঠান যুক্ত নয়। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমন্ডি ৮ নম্বরে ওই বায়োজিন ফার্মার অফিসে গিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগের ওই নেতা এ অফিসে শাফায়াতুল ইসলামের পাশের কক্ষে বসেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যয়বহুল বেসরকারি হাসপাতালের হূদেরাগ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এসব যন্ত্রপাতি চালানোর মতো বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশে নেই। একজন বিশেষজ্ঞ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অলংকার পরলে তো অলংকারের শেষ নেই। কিন্তু দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষকে সেবা দিতে যেসব যন্ত্রপাতি দরকার আগে সেগুলো কেনা উচিত।’
হূদরোগ ইনস্টিটিউটের কয়েকজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানটিতে তিন বছরের কম বয়সী রোগীদের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা মাঝে বন্ধ ছিল। কারণ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) প্রস্তুত ছিল না। এখন অস্ত্রোপচার চালু হলেও এ ব্যবস্থার মান নিয়ে চিকিৎসকেরাই সন্তুষ্ট নন। তা ছাড়া রোগীর সার্বক্ষণিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য কার্ডিয়াক মনিটর দরকার। ৪২টির মধ্যে ২৫টি এক বছর ধরে নষ্ট। বিপুলসংখ্যক রোগীর চিকিৎসায় ইসিজি ও ইকো মেশিন দরকার। অতি প্রয়োজনীয় এসব যন্ত্রপাতি জরুরি ভিত্তিতে কেনা দরকার।
ইনস্টিটিউট সূত্র জানিয়েছে, বায়োজিন ফার্মা একচেটিয়া কাজ শুরু করে ২০০৯ সালে। ওই বছর ৩০ মে ও ৫ জুন এক কোটি টাকা মূল্যের দুটি রেনাল গার্ড যন্ত্র সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি।
চিকিৎসকেরা জানান, রোগীর শরীরে পানি ও লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে রেনাল গার্ড ক্ষতি কমিয়ে আনে। কিন্তু সরবরাহ করা যন্ত্র দুটির একটিও কাজ করছে না। ২০০৯ সালের ৮ জুন যন্ত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক খন্দকার শহীদ হোসেন ও এম জালাল উদ্দিন লিখিত মন্তব্য দেন, যন্ত্র দুটি রোগীর শরীরে পানি ও লবণের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম।
তখন ক্রয় কমিটির সভাপতি ছিলেন কার্ডিওভাসকুলার সার্জারি বিভাগের খাজা এন মাহমুদ। তিনিই সই করে যন্ত্র দুটি গ্রহণ করেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে যন্ত্র দুটি বায়োজিন ফার্মার কাছ থেকে বুঝে নিয়েছিলেন। সচল না অচল তা জানা ছিল না।’ তবে এখন যন্ত্র দুটি পড়ে আছে। নতুন একটি রেনাল গার্ড যন্ত্র কেনার প্রক্রিয়া চলছে।
ওই বছর বায়োজিন ফার্মা চার কোটি ১৬ লাখ ২৭ হাজার টাকা দামের একটি টিএমআর যন্ত্র ও ৯৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা দামের একটি ইইসিপি যন্ত্র দেয়। যেসব রোগীর এনজিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারি করা যায় না, তাদের চিকিৎসায় এই যন্ত্র দুটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটি চার কোটি ৭৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা দামের স্টেম সেল থেরাপি যন্ত্র ও ২০১১ সালে আরও একটি ইইসিপি মেশিন দেয়। যাদের হূৎপিণ্ডের মাংসপেশি অত্যন্ত দুর্বল, স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে তাদের হূৎপিণ্ডের গায়ে রক্ত চলাচল উন্নত করা যায়।
সূত্র জানায়, স্টেম সেল থেরাপি যন্ত্র ও ইইসিপি চালানো শেখাতে ইনস্টিটিউটের কয়েকজনকে বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল বায়োজিন ফার্মার। কিন্তু তারা তা করেনি। এখন দুটি ইইসিপি যন্ত্র নষ্ট। নতুন একটি যন্ত্র আসছে। অন্যদিকে, স্টেম সেল থেরাপি যন্ত্রটিও অচল পড়ে আছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিঠি: কম প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির তালিকা আমলে না নেওয়ায় জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালককে ২০ জুন কড়া চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিছুদিন আগে ইনস্টিটিউটকে যন্ত্রপাতির একটি তালিকা পাঠায়। ওই তালিকায় ৯০ লাখ টাকা দামের দুটি স্ফিগমোকর যন্ত্র, এক কোটি ১০ লাখ টাকা দামের ইইসিপি যন্ত্র ও ৫০ লাখ টাকা দামের স্পার্টান (ডিএনএ টেস্ট ডিভাইস) আছে। কর্তৃপক্ষ কম প্রয়োজনীয় যন্ত্র বাদ দিয়ে খুব প্রয়োজন এমন যন্ত্রপাতির একটি তালিকা পাঠায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ২০ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর লেখে, ইনস্টিটিউটকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। সেই তালিকা থেকে যন্ত্র না বেছে কেন নিজেদের প্রয়োজনীয় যন্ত্রের নাম পাঠানো হলো তা জানাতে বলা হয়।
কিনছে অন্য প্রতিষ্ঠানও: খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালেও বায়োজিন ফার্মা ইইসিপি যন্ত্র সরবরাহ করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের ওই নেতা ইইসিপি যন্ত্র এখানেও দিতে চেয়েছিলেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রতিরোধের মুখে সফল হননি।




৬:৫১ PM
Akashnill
Posted in:
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন