রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১১

উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার খরা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে

সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুর একটি সহায়তা কেন্দ্রে চিকিত্সা নিচ্ছে খরাপীড়িত বুভুক্ষু শিশু। ১ জু সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুর একটি সহায়তা কেন্দ্রে চিকিত্সা নিচ্ছে খরাপীড়িত বুভুক্ষু শিশু। ১ জুলাই তোলা ছবিটি গত শুক্রবার প্রকাশ করা হয়
এএফপি
ইউনিসেফ গতকাল শনিবার হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ বলে পরিচিত অঞ্চলের খরা পরিস্থিতির শিগগির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বরং আগামী ছয় মাসে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার ওই অঞ্চলে গত ৬০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সোমালিয়া, ইথিওপিয়া, জিবুতি, কেনিয়া ইত্যাদি দেশ। এর মধ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই খারাপ থাকা সোমালিয়ার অবস্থা বিশেষভাবে খারাপ। প্রতিদিন কয়েক হাজার সোমালীয় কেনিয়া ও ইথিওপিয়ার উদ্দেশে দেশ ছাড়ছে।
খরা পরিস্থিতি সম্পর্কে ইউনিসেফের পরিচালক অ্যান্থনি লেক এএফপিকে বলেন, ‘পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা যথাসাধ্য কাজ করছি। তবে অবস্থা খুবই খারাপ। সোমালিয়ায় আগামী বছরের আগে কোনো ফসল হবে না। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী ছয় মাস পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।’
এদিকে যুক্তরাজ্য আফ্রিকার খরা উপদ্রুত মানুষের সহায়তায় পাঁচ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড জরুরি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে।
খরার কবলে পড়ে সোমালিয়ার অন্তত এক কোটি মানুষ দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। মড়ার ওপর খাঁড়ার আঘাত হয়ে উঠেছে মুসলিম জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা। দেশটির বড় এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেওয়া এই জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার কথিত ঘনিষ্ঠতার কারণে ত্রাণ সহায়তা দিতে অনেক দেশই আগ্রহী নয়।
হাজার হাজার সোমালীয় তাই দিনের পর দিন পায়ে হেঁটে সীমান্ত পাড়ি দিচ্ছে। তাদের অনেকের গন্তব্য কেনিয়ায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদ্বাস্তুশিবির। তবে এ যাত্রা মোটেও সহজ নয়। অনাহারী এ মানুষগুলো দীর্ঘ পথ হেঁটে কোনো রকমে প্রাণ নিয়ে উদ্বাস্তুশিবিরে পৌঁছায়। সম্প্রতি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা পরিস্থিতির এই বর্ণনা দেন আবদিও আলী এলমিওনামের নামের এক সোমালীয় নারী। ক্লান্ত এই নারী অত্যন্ত দুর্বল কণ্ঠে কোনো রকমে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর সাংবাদিককে বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে দিন-রাত হেঁটে দীর্ঘ দুর্গম পথ পাড়ি দেন তিনি। যে এলাকা থেকে এসেছেন, সেখানে কোনো খাবার নেই। না খেতে পেয়ে তিন শিশুসন্তানকে চোখের সামনে মরে যেতে দেখেছেন।
এদিকে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়কমন্ত্রী অ্যান্ড্রু মিচেল কেনিয়া সফরের আগে বলেছেন, তাঁর দেশের দেওয়া অর্থ খরা উপদ্রুত সোমালিয়া, ইথিওপিয়া ও কেনিয়ায় ব্যয় করা হবে। এএফপি, বিবিসি ও দ্য নিউইয়র্ক টাইমস অনলাইন।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons