সোমবার, ১১ জুলাই, ২০১১

চন্দ্রপুরের বাঁশের হাট

চিত্রার বুক থেকে বেরিয়ে ছুটে চলেছে আতাই নদী। কিছু দূর গিয়ে আচমকা বাঁক নিয়েছে নদীটি। বাঁকের একটু আগে নদীর ডান তীরে পড়ে আছে বাঁশের বড় বড় স্তূপ। চলছে বাঁশের বেচাকেনা। এটি চন্দ্রপুরের বাঁশের হাট।
এ হাট যশোরের অভয়নগর উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামে। প্রতি বুধবার এ হাট বসে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। এখানে সব প্রকারের বাঁশ বেচাকেনা হয়। পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা বাঁশ কেনেন। এখানে প্রতি হাটে গড়ে পাঁচ হাজার বাঁশ বিক্রি হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কেউ বাঁশের দরদাম করছেন। কেউ দরদাম মিটিয়ে নদীতে বাঁশ ফেলে দড়ি দিয়ে বাঁধছেন। বাঁশের স্তূপের ওপর বসে স্রোতের টানে নিজ নিজ গন্তব্যে যাত্রা শুরু করেছেন কেউ কেউ। বেশ কয়েকজন বাঁশ কাঁধে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন।
নড়াইলের শীতলবাড়ী গ্রাম থেকে ইব্রাহিম হোসেন ৭৯টি বাঁঁশ নিয়ে হাটে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘আশপাশের গ্রাম থেকে বাঁশ কিনে এনে এই হাটে বিক্রি করি। অন্য ব্যবসায়ীরা এই বাঁশ কিনে খুলনার বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, কয়রা, দাকোপ এবং সাতক্ষীরার তালা, শ্যামনগর, কালীগঞ্জ প্রভৃতি উপজেলায় নিয়ে বিক্রি করেন।’ চন্দ্রপুর গ্রামের ইলিয়াস শিকদার বলেন, এই হাটে গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার বাঁশ ওঠে। তবে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে এর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়।
এ হাট থেকে বাঁশ কিনে খুলনার দাকোপ ও কয়রায় নিয়ে বিক্রি করেন চন্দ্রপুর গ্রামের মতিয়ার রহমান খাঁন। তিনি বলেন, এখানে আকারভেদে ১০০ বাঁশ নয় থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
রামনগর গ্রামের বাসিন্দা বৈদ্যনাথ বিশ্বাস বলেন, নদীপথে যোগাযোগের ওপর ভিত্তি করে দেশ স্বাধীনের পরপর চন্দ্রপুর গ্রামে আতাই নদীর তীরে বাঁশের এ হাট গড়ে ওঠে। ছোট পরিসরে শুরু হলেও কালক্রমে এর পরিধি বেড়েছে। এখানে বাঁশ ছাড়া আর কোনো জিনিসপত্র বিক্রি হয় না।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons