
সংবর্ধনা নিচ্ছেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবুল বাশার মোল্লা। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বারখাদা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে গতকাল তোলা ছবি
প্রথম আলো
বিদ্যালয়টিতে শোক দিবস পালিত হয়নি, হয়নি কোনো দোয়া মাহফিল। কেউ ধারণ করেনি কালোব্যাজ। উল্টো ফুল, গান ও নৃত্য দিয়ে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে বরণ করে নেওয়া হয়েছে, দেওয়া হয়েছে সংবর্ধনা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শোক দিবস পালনের ব্যাপারে মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পৃথক নির্দেশনা জারি করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা কালোব্যাজ পরবেন। নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করবেন।
জানা গেছে, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবুল বাশার মোল্লা গতকাল সকালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে তাঁর পূর্বনির্ধারিত কাজে আসেন। পরে তিনি বারখাদা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির আমন্ত্রণে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। তাঁর আগমনে বিদ্যালয়ে সংবর্ধনা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চেয়ারম্যানকে বরণ করে নিতে বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় সকাল থেকেই শিক্ষক-কর্মচারীসহ কয়েক শ শিক্ষার্থীকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আসেন চেয়ারম্যান আবুল বাশার মোল্লা। এ সময় ফুল দিয়ে তাঁকে বরণ করে নেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণীকক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে করা হয় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আজমল গনি, কুষ্টিয়া জেলার শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার রুহুল আমিন, বারখাদা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আনোয়ারুল করিম। সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা শেষে একই স্থানে নাচ ও গান পরিবেশন করা হয়। পরে স্থানীয় লালন একাডেমির শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।
শোকের দিনে এমন আনন্দানুষ্ঠানের আয়োজন করায় অভিভাবকসহ স্থানীয় লোকজনের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, ‘চেয়ারম্যান যা করেছেন সেটা খুবই অন্যায় হয়েছে। কোনোভাবেই এটা উচিত হয়নি। একজন শিক্ষিত ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হয়ে তিনি এটা কীভাবে করলেন বোধগম্য হচ্ছে না।’
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ‘চেয়ারম্যান স্যার সম্মানিত মানুষ। তাই তাঁকে একটু ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়া হয়েছে। এটা তেমন কিছু না।’
চেয়ারম্যান আবুল বাশার মোল্লা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে একটা কাজে এসেছিলাম। মঙ্গলবার সকালে আনোয়ারুল করিমের আমন্ত্রণে ওই স্কুলে যাই। শোক দিবসের কথা গণমাধ্যমে শুনেছি। সরকারিভাবে কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই স্কুলে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তারপর রবীন্দ্রসংগীত ও গান-বাজনা শুরু হলে আমি চলে আসি।’
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মল্লিক আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কালোব্যাজ ধারণসহ শোক দিবস পালনের নির্দেশনা রয়েছে।’




১১:২০ AM
মম
Posted in:
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন