‘ট্রাকটি যখন এলোমেলো চলছিল, তখনই আমাদের ভয় হচ্ছিল। একপর্যায়ে ট্রাকটি দ্রুতগতিতে সেতুর ওপর উঠলে প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়ে আমরা ট্রাকের মধ্যেই ছিটকে পড়ি। তখন দেখি, চালক মোবাইলে কথা বলছেন, আর উল্টো দিক থেকে আসছে একটি নছিমন। মুহূর্তের মধ্যে আমরা ডিগবাজি খেয়ে পড়ে গেলাম পানির ভেতর। কাদাপানি খাওয়ার পর এলাকার মানুষ এসে আমাদের উদ্ধার করে।’
ট্রাক দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া এমরান হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোর কাছে এভাবে দুর্ঘটনার বর্ণনা দেয়। সে আবু তোরাব উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া-আবু তোরাব সড়কের সৈদালি এলাকায় গতকাল দুপুরে তাদের বহনকারী ট্রাক পানিতে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বেঁচে যাওয়া একই স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র বোরহান ও ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র নিজাম উদ্দীনও একই বক্তব্য দিয়েছে। তারা বলে, ট্রাকটির মালিক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন। ট্রাকটি যাওয়ার সময় চালক নিজেই চালিয়েছিলেন, আর ফেরার সময় চালকের আসনে বসে সহকারী বা হেলপার মফিজ। ট্রাকে গাদাগাদি করে লোক তোলা হয়। এমনকি মাঝপথেও কিছু লোক তোলা হয়। তিন শিশু-কিশোর এ বর্ণনা দেওয়ার সময় ভয়ে কাঁপছিল।
একই ধরনের কথা বলেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সুপার জেড এ মোরশেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি, ট্রাকটি হেলপার চালাচ্ছিল। এখন চালক-হেলপার উভয়কেই খোঁজা হচ্ছে।’
জানা গেছে, দ্রুতগতিতে যখন ট্রাকটি দক্ষিণ সৈদালির উঁচু সেতুর ওপর ওঠে, তখন চালক মোবাইলে কথা বলছিল। হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে সে। এ সময় উল্টো দিক থেকে একটি নছিমন আসছিল। চালক পাশ কেটে যাওয়ার চেষ্টা করলে অমনি উল্টে গিয়ে খাদে পড়ে ট্রাকটি।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান বলেন, ‘আমরা যখন ঘটনাস্থলে যাই, তখন ট্রাকটির চারটি চাকাই ওপরের দিকে ছিল। স্থানীয় লোকজন ট্রাকটি সরানোর চেষ্টা করছিল। ট্রাকের চারদিকের কাঠের বেষ্টনী উল্টে পড়ার পর এটি একটি খাঁচায় পরিণত হয়। এই খাঁচা থেকে ছোট ছোট ছেলেরা বের হতে পারেনি বলে তাদের মর্মান্তিক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়।’




১২:১৬ PM
Akashnill
Posted in:
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন