বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সালিশের নামে তিন সন্তানের এক জননীকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে।
ঘটনার দুই দিন পর সোমবার রিপা বেগম নামে ওই গৃহবধূকে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের তিন তলার নয় নম্বর ওয়ার্ডে তিনি চিকিৎসাধীন।
অভিযুক্ত মেহেন্দিগঞ্জের আলিমাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী আবদুর রশিদকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য্য।
রশিদ বরিশাল-৪ আসনের বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের আপন চাচা।
গৃহবধূ রিপার অভিযোগ
সোমবার গৃহবধূ রিপা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, মেয়ে তারমিনকে মারধরের অভিযোগ এনে প্রতিবেশি শাবুদ্দিন মোল্লাসহ কয়েকজনের নামে বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন তিনি। পরে বিচারক মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার ওই ঘটনার সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আদালত থেকে নোটিস পাঠানো হয়।
২৪ জুলাই বিচারকের স্বাক্ষরিত নোটিসটি ৩০ জুলাই রিপার গ্রামের বাড়ি শ্রীপুরে পৌঁছে।
গৃহবধূর অভিযোগ, নোটিসের বিষয় জানাজানি হলে ওই দিন সকালে শাবুদ্দিন মোল্ল¬ার নেতৃত্বে প্রতিবেশি হারুন ঘরামী, মান্নান শেখসহ ৮-১০ জন তার ঘরে হামলা চালায়।
"ঘটনার পর ওই দিন সন্ধ্যার দিকে গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) মাহেব হোসেন, ফখরুল ইসলাম এবং এমদাদুল হক সালিশের কথা বলে আমাকে ঘর থেকে নিয়ে যায়। রাতে চেয়ারম্যানের অস্থায়ী কার্যালয়ে সালিশে মামলায় সাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ারও চেষ্টা করেন তারা।"
রিপা জানান, স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে চেয়ারম্যান রশিদ বৈদ্যুতিক তার পেঁচানো লাঠি দিয়ে তাকে উপুর্যপরি আঘাত করতে থাকেন। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।
স্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী মেহেন্দীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনছারুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তুচ্ছ ঘটনায় জের ধরে রিপা বেগমের সঙ্গে প্রতিবেশি হারুন ঘরামীর স্ত্রী কুলসুমের ঝগড়া হয়। এ ঘটনায় হারুন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ করে। পরে চেয়ারম্যান কাজী আবদুর রশিদ সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে সালিস বৈঠকের আয়োজন করে।
ওই গৃহবধূকে চেয়ারম্যান মারধর করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "বেতের লাঠি দিয়ে রিপাকে আঘাত করার কথা চেয়ারম্যান আমার কাছে স্বীকার করেছেন।"
৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আবুল হোসেন জানান, এলাকায় রিপা বেগমেরও অনেক দুর্নাম রয়েছে। সে সমাজ ও দেশের কোনো নিয়ম মানে না। তাই সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিলো।
সালিশে সবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার জন্য তাকে পিটুনি দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবদুর রশিদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে অপর প্রান্ত থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি বলেন, "চেয়ারম্যান সাহেব আপনার সঙ্গে পরে দেখা করবে।"
এর পর থেকে ওই নম্বরটি বন্ধ রয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/




১:৩৯ PM
Akashnill
Posted in:
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন