শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১১

ধর্মগুরুর বাণী : বহুগামিতায় মেলে পরকালের অফুরন্ত স্বর্গ-সুখ !


হ-বাংলা নিউজ : ওয়ারেন জেফ নামে ক্রিস্টান মৌলবাদী ধর্মগুরুকে ৭৫ বছরের কারাদ- দিয়েছেন আমেরিকার টেক্সাসের এক আদালত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ_ তিনি বালিকা বধূদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। মজার বিষয় হলো, ওই কথিত ধর্মগুরুর স্ত্রীর সংখ্যা ৭৮ জন, যার মধ্যে এক ডজন ষোড়শী এবং এক ডজন অনুর্ধ্ব ১৫ বছরের বালিকা।

ফান্ডামেন্টালিস্ট চার্চ অফ জেসাস ক্রাইস্ট অফ লেটার ডে সেইন্ট বা এফএলডিএসের শীর্ষ ধর্মগুরু ওয়ারেন জেফকে দুটি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে ১২ বছর ও ১৫ বছরের দুই বালিকাকে স্ত্রী বানিয়ে যৌন-সঙ্গমে নিযুক্ত করা। ওয়ারেন জেফের নেতৃত্বাধীন এফএলডিএস চার্চের অনুসারীরা বহু বিবাহে বিশ্বাসী এবং তারা মনে করেন, পৃথিবীতে বহুগামিতার ফলে 'পরকালের' অফুরন্ত স্বর্গ-সুখ লাভ করা যায়।

উল্লেখ্য, ১৮২০ সালে নিউইয়র্কে জোসেফ স্মিথ খ্রিস্টান মৌলবাদী মরমন সমপ্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি স্বয়ং ৩০ নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। ৭০ বছর পর ১৮৯০ সালে আমেরিকার কেন্দ্রীয় সরকারের অস্বীকৃতি ও চাপের মুখে এ সমপ্রদায়ের প্রধান অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বহুগামী চর্চা ছাড়তে বাধ্য হয়। কিন্তু মরমনদের ক্ষুদ্র একটি অংশ; যারা এ চর্চা অব্যাহত রাখেন। সারা আমেরিকা থেকে এসে তারা জড়ো হয় টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে। বর্তমানে এ সমপ্রদায়ের প্রায় ১০ হাজার অনুসারী আছে।

টেক্সাসের স্যান অ্যাঞ্জেলোর ৪৫ কিলোমিটার দূরে এলডোরাডোতে এক হাজার ৭০০ একর নিজস্ব জমিতে অবস্থিত ওই চার্চের অনুসারীরা মনে করে, তারাই প্রকৃত মরমন এবং ওয়ারেন জেফ হচ্ছেন দুনিয়ায় ঈশ্বরের প্রেরিত পুরুষ ও মুখপাত্র।

বার্তা সংস্থাগুলো বলছে, ২০০৮ সালের এপ্রিলে শিশু যৌনপীড়ন সংক্রান্ত একটি ফোন কল পাওয়ার সূত্র ধরে টেক্সাস কর্তৃপক্ষ ওই চার্চে হানা দিয়ে ওয়ারেন জেফ ও তার অনুসারীদের গ্রেপ্তার করে। সে সময় ৪৫০ জনের বেশি শিশুকে উদ্ধার করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের জিম্মায় রাখা হয় এবং পরবর্তী সময়ে তাদেরকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
এরপর তিন বছরের বেশি সময় বিচারাধীন জেফের যৌন অপকর্ম সংক্রান্ত রায় মঙ্গলবার দেয়া হলো। বিচারক ওয়ালথারের আদালতে জেফের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে অডিও রেকর্ড ও তার পা-লিপি জুরিদের সামনে তুলে ধরা হয়। এতে ১২ ও ১৫ বছরের বালিকাদের প্রতি ওয়ারেন জেফের যৌন নির্দেশ ও শীৎকারের শব্দ শোনা যায়। এছাড়াও ১৫ বছরের এক বালিকার গর্ভজাত শিশুর ডিএনএ'র সঙ্গে জেফের ডিএনএ'র মিল পাওয়ার প্রমাণও আদালতে হাজির করা হয়।

অবশ্য ওয়ারেন জেফ গোটা বিচার প্রক্রিয়াকে অন্যায় এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সরকারি হস্তক্ষেপ বলে নিন্দা করেছেন। মামলায় ধর্মগুরু জেফ বারবার তার আইনজীবী পরিবর্তন করে শেষ পর্যন্ত নিজেই নিজের আইনি প্রতিনিধিত্ব করে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি বহুগামিতাকে 'বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক নিয়ম' এবং 'ঈশ্বরের আইনসমূহের একটি' বলে দাবি করেন। ধর্মগুরু জেফ তার কাছে যিশু খৃস্টের 'প্রেরিত বাণী' পাঠ করে শুনিয়ে শুক্রবার তাকে রায়দানকারী বিচারক বারবারা ওয়ালথারকে অভিশাপ দিয়ে বলেন, খুব শিগগির কঠিন ব্যাধিতে তার মৃত্যু হবে। তারপরও জুরিদের রায়ে খ্রিস্টান মৌলবাদী ধর্মগুরু ও বহুগামী ওয়ারেন জেফ দোষী সাব্যস্ত হন। -
সূত্র :  এএফপি, এবিসি নিউজ

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons