রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১১

হবু বর-কনের ওপর গোয়েন্দাগিরি!

ভারতে বিয়ের আগে বর বা কনের পারিবারিক অবস্থা, স্বভাব-চরিত্র ও ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য আজকাল অনেকেই বেসরকারি গোয়েন্দা নিয়োগ করছেন। এতে বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যবসাও দিন দিন ফুলেফেঁপে উঠছে।
আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে এখন অনেকেই মুঠোফোন বা ইন্টারনেটে পরিচয়ের সূত্র ধরে সম্পর্ক এবং বিয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সন্তানেরা এভাবে সিদ্ধান্ত নিলেও তাদের বাবা-মা বা অভিভাবকেরা মেয়ে বা ছেলের হবু স্বামী বা স্ত্রীর বিষয়ে তেমন কিছুই জানতে পারেন না। এ জন্যই অভিভাবকেরা গোয়েন্দাদের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হচ্ছেন।
অনিতা নামের এক নারী তাঁর ছোট বোনের হবু বরের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য গোয়েন্দা নিয়োগ দিয়েছেন। কর্মস্থলেই এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক এবং ভালোবেসে বিয়ে করতে যাচ্ছেন তাঁর বোন। কিন্তু তাঁর বাবা-মা ওই ছেলের পারিবারিক ও আর্থিক অবস্থা যাচাই করে দেখতে চান। এ জন্যই তাঁরা গোয়েন্দার আশ্রয় নিয়েছেন।
অনিতা বলেন, ‘এটা গোয়েন্দাগিরি নয়। আমরা শুধু বিয়ের আগে বোনের হবু স্বামীর বিষয়ে একটু খোঁজখবর নিয়ে দেখতে চাইছি।’
এ জন্য অনিতার পরিবার একটি বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে। ওই সংস্থা এক মাস তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে দিয়েছে। এতে ওই যুবকের উপার্জন, পরিবারের ইতিহাস, আগের সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
অনিতা বলেন, ‘বোনের প্রেমিক আমাদের জানিয়েছেন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠিত পরিবারের সন্তান। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে সত্য বলেছেন কি না, আমরা তা নিশ্চিত হয়ে নিতে চাই।’ কিন্তু এই গোয়েন্দাগিরির বিষয়টি জানেন না অনিতার বোন।
অনিতা বলেন, ‘ভারতে সাধারণত পারিবারিকভাবেই বিয়ে ঠিক করা হতো। এ জন্য স্বাভাবিকভাবে বিয়ের আগে বর বা কনের বিষয়ে বিভিন্ন রকম খোঁজখবর নেওয়া যেত। কিন্তু এখন ছেলেমেয়েরা নিজেদের মতো করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বাইরে বাইরে পরিচয় এবং তা থেকেই সিদ্ধান্ত, শুধু নিজেদের ভালো লাগার ওপর ভর করে। অন্য অনেক বিষয় তারা বিবেচনায় আনে না। এমনকি যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছে, সে আগে বিয়ে করেছে কি না বা সন্তান আছে কি না, তা-ও জানে না। এ জন্য এসব বিষয় যাচাই করে দেখা প্রয়োজন হয়ে পড়ে।’
অনিতার পরিবার সাহায্য নিয়েছে মুম্বাইভিত্তিক গোয়েন্দা সংস্থা ভেটেরান ইনভেস্টিগেশনের। এই সংস্থাটি প্রায় ৪০ বছর ধরে এ ধরনের গোয়েন্দাগিরির কাজ করছে।
সংস্থাটির কর্তা রাহুল রায় জানান, বাবা-মায়েরাই আসেন তাঁদের ছেলে বা মেয়ের হবু স্বামী-স্ত্রীর ‘চরিত্র’ সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে। তিনি বলেন, ‘সাধারণভাবে চরিত্র বলতে হবু বর-কনের বিভিন্ন ব্যক্তিগত বিষয় যেমন—জীবন-অভ্যাস, অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক ছিল কি না, মাদকাসক্ত ছিল কি না—এসব বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হয়।’ বিবিসি।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons